‘১৭০০ টাকার জন্য’ বন্ধুর ছেলেকে হত্যা

লালবাগের বালুর মাঠ থেকে তিন দিন আগে নিখোঁজ সাত বছরের শিশু হৃদয় সানার বস্তাবন্দি লাশ পাওয়া গেছে কামরাঙ্গীরচরের আলীনগর এলাকায়।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Jan 2019, 04:11 PM
Updated : 29 Jan 2019, 04:15 PM

এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে হৃদয়ের বাবা রমজান সানার বন্ধু ইয়াছিনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়ে লালবাগ বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার কামাল হোসেন বলেছেন, “ধারের ১৭০০ টাকার জন্য সে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।”

চায়ের দোকানদার রমজান লালবাগের শহীদনগর এলাকার এক নম্বর গলিত ভাড়া থাকেন। আর ইয়াছিন থাকেন কামরাঙ্গীরচরের আলীনগরে। এক সময় রিকশা চালালেও এখন তার স্থায়ী কোনো পেশা নেই।

লালবাগ নিউ ইসলামিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণির ছাত্র হৃদয় শনিবার বিকালে বালুর মাঠে খেলার সময় নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় রোববার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন তার বাবা।

এরপর মঙ্গলবার বিকালে কামরাঙ্গীরচরের আলীনগরে নির্জন জায়গায় বস্তার ভেতর লাশ দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পরে হৃদয়ের বাবা ও মা অর্ধগলিত মৃতদেহ দেখে ছেলের লাশ শনাক্ত করেন বলে উপ-কমিশনার মো. কামাল হোসেন জানান।

তিনি বলেন, লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ বালুর মাঠ এলাকার রাস্তায় বসানো সিসি ক্যামেরার ভিডিও দেখে ইয়াছিনকে শনাক্ত করে। ওই ভিডিওতে তাকে হৃদয়ের হাত ধরে নিয়ে যেতে দেখা যায়। পরে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।  

গ্রেপ্তার ইয়াছিন

“প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইয়াছিন বলেছে, হৃদয়ের বাবার কাছে সে ১৭০০ টাকা পায়। সেই টাকা আদায় করতে না পেরে সে বাচ্চাটাকে আলীনগরে নিজের বাসায় নিয়ে যায়। হৃদয়কে আটকে রেখে রমজানকে ভয় দেখাতে চেয়েছিল সে। কিন্তু কান্নাকাটি থামাতে মুখচাপা দিতে গিয়ে সে ছেলেটাকে মেরে ফেলে। “

কামাল হোসেন বলেন, হৃদয়ের মৃত্যু হলে তার লাশ বাসার চকির নিচে রেখে শনিবারই স্ত্রীকে নিয়ে পাশে শাশুড়ির বাসায় চলে যান ইয়াসিন। সেখানেই তিন রাত ছিলেন তিনি।

“কিন্তু মৃতদেহ থেকে দুর্গন্ধ বের হলে ধরা পড়ে যেতে হবে এই ভয়ে সে সোমবার রাতে নিজের বাসায় ফিরে বস্তায় লাশ ভরে একটু দূরে নির্জন এক জায়গায় রেখে দেয়।”

উপ-কমিশনার কামাল বলেন, এই কয়দিন রমজান যখন বিভিন্ন জায়গায় হন্যে হয়ে ছেলের খোঁজ করছিলেন, বন্ধু হিসেবে ইয়াসিনও তার সঙ্গে থেকে অভিনয় করে গেছেন। ফলে পুলিশ প্রথমে তাকে সন্দেহ করেনি। পরে সিসিটিভি ফুটেজ দেখেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

হৃদয়দের গ্রামের বাড়ি খুলনার সোনাডাঙ্গার শেখ পাড়ায়। রমজানের দুই ছেলের মধ্যে হৃদয় ছিল বড়।