মনোনয়নপত্র জমায় আতিকই প্রথম

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে উপনির্বাচনে প্রার্থী হতে ২৫ জন মনোনয়নপত্র নিলেও প্রথম জমা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Jan 2019, 12:20 PM
Updated : 29 Jan 2019, 12:23 PM

মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা শেষ হওয়ার একদিন আগে মঙ্গলবার বিকালে আতিক আগারগাঁওয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটে (ইটিআই) রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ইসির যুগ্মসচিব আবুল কাসেম সাংবাদিকদের জানান, গত বছর ১৯ জন এবং এবার ৬ জন মিলিয়ে মোট ২৫ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছে। মেয়র পদে মঙ্গলবার পর্যন্ত মাত্র একজনই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় এই মেয়র নির্বাচনে প্রার্থী হতে বুধবার পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে।

আনিসুল হকের মৃত্যুতে শূন্য ডিএনসিসিতে মেয়র পদে উপ-নির্বাচনের জন্য গত বছর তফসিল হলেও আদালতে তা আটকে গিয়েছিল। সম্প্রতি আদালতের সায় পাওয়ার পর পুনঃতফসিল দেয় ইসি।

গত বছর তফসিল ঘোষণার পর যে ১৯ জন মনোনয়নপত্র নিয়েছিলেন, তাদের নতুন করে মনোনয়নপত্র নিতে হচ্ছে না; জমা দিলেই চলছে।

তবে আগের বার মনোনয়নপত্র নেওয়া বেশিরভাগই বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জিজ্ঞাসায় নির্বাচনে অংশ নিতে অনাগ্রহের কথা জানিয়েছেন।

একাদশ সংসদ নির্বাচনে ‘ভোট ডাকাতি’র অভিযোগ তোলার পর বিএনপি ইতোমধ্যে ঢাকা উত্তরে মেয়র পদের এই উপনির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।

আনিসুল হকের ছেলে আতিকের সমর্থক

প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের ছেলে নাভিদুল হক মেয়র প্রার্থী আতিকের মনোনয়নপত্রে সমর্থক হিসেবে থাকছেন।

আনিসুল হকের মতো আতিকও তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ছিলেন। আতিক এখন পোশাক খাতের শ্রম পরিস্থিতি ও পণ্যের মান উন্নয়নে গঠিত ‘সেন্টার অফ এক্সেলেন্স ফর বাংলাদেশ অ্যাপারেল ইন্ডাস্ট্রিজ-সিবাই’র সভাপতি।

আতিকের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়ক এ কে এম মিজানুর রহমান জানান, পাঁচটি আলাদা মনোনয়নপত্রে ১০ জন প্রস্তাবক-সমর্থক ছিলেন।

কোনো ভুলের কারণে যেন প্রার্থিতা বাতিল না হয়, সেজন্য সতর্কতা হিসেবে একজন প্রার্থী একাধিক মনোনয়নপত্র দাখিল করে থাকেন।

আতিকের প্রস্তাবকের মধ্যে রয়েছেন তার ভাই সাবেক প্রধান বিচারপতি মো. তাফাজ্জাল ইসলাম, ঢাকা-১১ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম রহমাতুল্লাহ, জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন ও এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন।

সমর্থকদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, চ্যানেল আইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, সাংবাদিক আবেদ খান, আতিকুল ইসলামের স্ত্রী শায়লা শগুফতা ইসলাম ও আনিসুল হকের ছেলে নাভিদুল হক।

মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় আতিকের সঙ্গে ছিলেন ফরাসউদ্দিন, শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি  নিহাদ কবির।

আওয়ামী লীগের কোনো নেতা উপস্থিত ছিলেন না। সংসদীয় কমিটি নিয়ে বৈঠক থাকায় তারা কেউ আসতে পারেননি বলে জানান আতিকুল।

মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে আতিক সাংবাদিকদের বলেন, বিধি মেনে পাঁচজন নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, “জনতার ভোটে যদি জয়লাভ করি, ইনশাল্লাহ প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক ঢাকা উত্তরকে যে মাপে নিয়ে গেছেন, আমরা অবশ্যই আপনাদের সবাইকে নিয়ে চেষ্টা করব সেই মাপে থাকার জন্য; পারলে তার উপরে যাওয়ার জন্যে। নিচে কখনও গেলে তা জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে।”

বিএনপি অংশ না নিলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনে জয়ী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন আতিক।

তিনি বলেন, “আমি যতবার বিজিএমইএতে নির্বাচিত হয়েছি, ততবারই নির্বাচনের মাধ্যমে হয়েছি। আমার রক্তে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন। আমরা  অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন পছন্দ করি। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ যাকে ভোট দেবে, আমরা তাকেই মেনে নেব।”

বুধবারের মধ্যে আর কেউ মনোনয়নপত্র জমা না দিলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে পারেন আতিক।

তিনি বলেন, “কেউ যদি না আসেন, ইসি তফসিল দিয়েছেন, সে অনুযায়ী কাজ হবে। আমি তফসিল অনুযায়ী জমা দিয়েছি।

“কেউ নির্বাচনে আসুক বা না আসুক, আমি যদি জয়ী হই, কথা দিতে পারি, যেদিন থেকে দায়িত্ব নেব, সেদিন থেকে সততা, সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করব।”