বায়ুদূষণ বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার নির্দেশ হাই কোর্টের

ঢাকা শহরে যারা বায়ুদূষণের কারণ সৃষ্টি করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সপ্তাহে দুই বার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে পরিবেশ অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Jan 2019, 08:44 AM
Updated : 28 Jan 2019, 11:26 AM

আদালত বলেছে, রাজধানীর যেসব জায়গায় উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ চলছে, সেসব জায়গা আগামী ১৫দিনের মধ্যে এমনভাবে ঘিরে ফেলতে হবে, যাতে শুকনো মৌসুমে ধুলো ছড়িয়ে বায়ু দূষণ বাড়তে না পারে।

পাশাপাশি ‘ধুলোবালি প্রবণ’ এলাকাগুলোতে দিনে দুই বার করে পানি ছিটাতে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নিতে হবে।

এসব নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার পরের দুই সপ্তাহের মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের দুই মেয়র ও নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রতিবেদন দিতে বলেছে হাই কোর্ট।

হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) একটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান এবং বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাই কোর্ট বেঞ্চ সোমবার রুলসহ এই আদেশ জারি করে।

ঢাকা শহরের বায়ুদূষণ রোধে প্রশাসনের ‘নিষ্ক্রিয়তা’ কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং ঢাকা শহরের বায়ুদূষণ বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়েছে ওই রুলে।

বন ও পরিবেশ সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পরিচালক, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র, নির্বাহী কর্মকর্তা, ডিএমপি কমিশনার, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ -রাজউক চেয়ারম্যানসহ ১১ বিবাদীকে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। 

বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ঢাকার বায়ুদূষণ নিয়ে প্রকাশিত খবর ও প্রতিবেদন যুক্ত করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী, এখলাছ উদ্দিন ভূইয়া ও রিপন বাড়ৈ গত রোববার হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই রিট আবেদন করেন।

তাদের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মঞ্জিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

মনজিল মোরসেদ পরে সাংবাদিকদের বলেন, “পরিবেশ আইনের অধীনে ১৯৯৭ সালে যে বিধিমালা হয়েছ, সেখানে বায়ুতে ক্ষতিকর উপাদানের মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়াও চলমান বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের ওয়ার্ক অর্ডারে বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণের শর্ত উল্লেখ থাকলেও তারা তা মানছেন না। এ কারণে ভয়াবহ বায়ু দূষণের শিকার হচ্ছে ঢাকা মহানগরীর লাখ লাখ মানুষ।”  

এ আইনজীবী বলেন, “সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বেঁচে থাকা মানুষের মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃত। এভাবে বায়ু দূষণ ঘটিয়ে মানুষের বেঁচে থাকাকেই দুর্বিষহ করে তুলছে। সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, আইন ব্যতীত জীবন ও ব্যক্তি-স্বাধীনতা হইতে কোনো ব্যক্তিকে বঞ্চিত করা যাইবে না।”