সৈয়দ আবুল হোসেনকে নিয়ে সাড়ে ৪ বছর পর গেল দুদকের চিঠি

পদ্মা সেতু নির্মাণে অনিয়ম ও ‍দুর্নীতির অভিযোগ থেকে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রায় সাড়ে চার বছর পর আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Jan 2019, 07:09 PM
Updated : 23 Jan 2019, 07:09 PM

গত বছর সৈয়দ আবুল হোসেনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে দুদক সচিব শামসুল আরেফিনের সই করা চিঠি পাঠানো হয়।

বহু জল ঘোলা হওয়ার পর বহু প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সরকার নিজস্ব অর্থায়নে শুরু করার পর সেতুর ষষ্ঠ স্প্যান যেদিন উঠল, তার একদিন আগেই দুদকের চিঠি গেল।

চিঠিতে বলা হয়, “সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে মূল পদ্মা সেতুর নির্মাণের নিমিত্ত প্রাক-যোগ্যতা নির্ধারণী প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও দুর্নীতি সংক্রান্ত অভিযোগটি অনুসন্ধানকালে প্রাপ্ত তথ্য ও রেকর্ডপত্রের আলোকে প্রমাণিত হয়নি বিধায় তা দুদক কর্তৃক অনুসন্ধান পরিসমাপ্তির মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হয়েছে।”

দক্ষিণ জনপদের সঙ্গে রাজধানীর সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপনে পদ্মায় ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু তৈরিতে ২০১১ সালের ২৮ এপ্রিল বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করেছিল সরকার।

কিন্তু এরপর বিশ্ব ব্যাংক দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলার পর শুরু হয় সংস্থাটির সঙ্গে টানাপড়েন। দুদকও নামে তদন্তে। তখন যোগাযোগমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন সৈয়দ আবুল হোসেন, তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। 

বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে টানাপড়েনের এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১২ সালে নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন।

পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে ৩৬ ও ৩৭ নম্বর পিলারের উপর বুধবার বসানো হল আরও একটি স্প্যান; যার মধ্যে দিয়ে সেতুর ১০৫০ মিটার অংশ দৃশ্যমান হল। ছবি: আব্দুল্লাহ আল মমীন

এদিকে দুদক অনুসন্ধান শেষে ২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করে। মামলায় আসামির তালিকায় আবুল হোসেনকে রাখা না হলেও সন্দেহভাজন হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

২০১৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বর পদ্মা সেতু দুর্নীতির ষড়যন্ত্র মামলা থেকে সাত আসামিসহ সবাইকে অব্যাহতি দিয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় দুদক।

এরপর দুদকের সিদ্ধান্তের আনুষ্ঠানিক চিঠি চেয়ে গত বছরের ১৪ নভেম্বর আবেদন করেন সাবেক মন্ত্রী আবুল হোসেন।

এই প্রকল্প তদারকির পাঁচ কোটি ডলারের কাজ পেতে কানাডিয়ান কোম্পানি এসএনসি-লাভালিন বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের ঘুষ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন বলে অভিযোগ তোলা হয়েছিল বিশ্ব ব্যাংকের পক্ষ থেকে।

বিষয়টি নিয়ে কানাডার আদালতেও মামলা হয়েছিল। ২০১৭ সালে কানাডার আদালতও অভিযোগ খারিজ করে দেয়।