প্রযুক্তিতে ৫ বছরে দেশ কোথায় যাবে কেউ আন্দাজও করতে পারে না: মন্ত্রী

বাংলাদেশ এখন ৮০টি দেশে সফটওয়্যার রপ্তানি করছে জানিয়ে তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, আগামী পাঁচ বছরে প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ কোথায় পৌঁছাবে তা পৃথিবীর কেউ আন্দাজ করতে পারে না।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Jan 2019, 05:26 PM
Updated : 23 Jan 2019, 05:27 PM

বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকার সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের’ স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, “আমরা এখন পৃথিবীর ৮০টি দেশে সফটওয়্যার রপ্তানি করি। শুধু তাই করি না, এখন পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ স্মার্টফোনটা বাংলাদেশে বানাই।”

বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন দেশে উন্নতমানের ডিভাইস রপ্তানি করা হচ্ছে জানিয়ে এক একটি উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের দেশ থেকে এক ধরনের ডিভাইস… যে ডিভাইস সেন্সর করতে পারে, আপনারা শুনে খুশি হবেন মাত্র তিন মাস আগে সৌদি আরবে বাংলাদেশ থেকে আমরা আওটি ডিভাইস রপ্তানি করেছি। একটি কোম্পানি আমাদের কাছ থেকে এই টেকনোলজি নিয়েছে।

“এই ডিভাইসের মাধ্যমে বাড়ির মালিক তার ঘরে বসে থেকে স্মার্টফোনে দেখবে তার পানির ট্যাংক খালি হয়েছে কি না, খালি হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পাম্প চালু হবে। বাঙালি যে এই কাজ করতে পারবে তা সম্ভবত পৃথিবীর কেউ একাত্তর সালে কল্পনা করতে পারেনি।”

মন্ত্রী বলেন, “এসব কাজের মাধ্যমে বাংলাদেশ জানিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশ কেবল এখন এশিয়ার টাইগারই না, বাংলাদেশ এখন দৃষ্টান্ত স্থাপন করে সারা পৃথিবীর কাছে।”

নির্বাচনে জয়ী হয়ে শেখ হাসিনা আরও পাঁচবছর দেশ শাসনের সুযোগ পাওয়ায় দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে মোস্তাফা জব্বার বলেন, “এই পাঁচ বছর পরে বাংলাদেশ কোথায় যাবে এটি সম্ভবত সারা দুনিয়ার কেউ আন্দাজও করতে পারে না।”

তবে সেই জায়গাতে যাওয়ার চ্যালেঞ্জ আছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের প্রযুক্তিগত রূপান্তর দরকার, তবে এ রূপান্তর ঘটবে। বাংলাদেশের বড় সম্পদ মানুষ। মানুষকে ডিজিটাল করতে শিক্ষার ডিজিটাল করতে হবে।”  

গত ১০ বছরে বাংলাদেশ যে দৃষ্টান্তগুলো স্থাপন করেছে, সেগুলো অন্যান্য দেশকে অনুসরণ করতে হবে বলে মন্তব্য করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ, তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রী জব্বার।

বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতির ফোরামের আয়োজনে এই আলোচনায় শিক্ষমন্ত্রী দীপু মনি বলেন, “প্রাক প্রাথমিক থেকেই আমাদের সংস্কৃতি শিক্ষার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হওয়া উচিত। সেখানে ন্যূনতম কয়েকটি গান, কবিতা শেখানোর দরকার। দেশ সম্পর্কে ভালোবাসা শিশুদের মধ্যে জাগ্রত করার জন্য কিছু জিনিস শেখানোর দরকার।

“এই শিক্ষা দেওয়ার দরকার, যা দেশের সংস্কৃতির ভাণ্ডার যাতে তারা ধারণ করতে পারে।”

তথ্য-প্রযুক্তি মানুষের বৈষম্য দূর করে দিচ্ছে মন্তব্য করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “তথ্য প্রযুক্তি নিয়ে যারা কাজ করছে সে শহুরে মানুষ, নাকি গ্রামের মানুষ, নারী না পুরুষ, সে কি বিত্তবান নাকি বিত্তহীন তা এখন আর বিবেচ্য বিষয় নয়। তথ্য প্রযুক্তি-বিজ্ঞান বৈষম্যগুলো দূর করে দিচ্ছে।

“তথ্য প্রযুক্তির জগৎ দিয়ে আমরা যেমন বিশ্ব মানব হব, একইসঙ্গে সেটি যেন আমাদের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐহিত্য রয়েছে তার সঙ্গে যেন সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, তার সঙ্গে যেন যোগাযোগ থাকে, সম্পৃক্ততা থাকে। আমরা বিশ্ব মানব হতে গিয়ে আমাদের সমৃদ্ধি সেটিকে বাদ দিয়ে না চলে যাই।”

স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে দীপু মনি বলেন, “বঙ্গবন্ধুর কাছে বলবার এইটুকুই যে, পিতা তুমি চলে গেছ, তোমাকে আমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে, কিন্তু এই বাঙ্গালি তোমার কন্যার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। তুমি যে সোনার মানুষ চেয়েছিলে সেই সোনার মানুষ গড়বার জন্য তোমার কন্যার নেতৃত্বে আজকের বাংলাদেশ কাজ করে যাচ্ছে।”

বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতির ফোরামের নির্বাহী সভাপতি কণ্ঠশিল্পী ও সাংসদ মমতাজ বেগমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ও সংগঠনের সহ-সভাপতি মনোরঞ্জন ঘোষালসহ আরও অনেকে বক্তব্য দেন।