বইমেলার সার্বিক ব্যবস্থাপনায় অখুশি সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী

ভাষার মাসে বাংলা একাডেমির অমর একুশে বইমেলার আর এক সপ্তাহ বাকি থাকলেও আয়োজনের সার্বিক অবস্থা দেখে সন্তুষ্ট হতে পারেননি সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বাবু।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Jan 2019, 08:27 AM
Updated : 23 Jan 2019, 10:12 AM

বুধবার সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলার প্রস্তুতি দেখার পর একাডেমির মহাপরিচালকের সভাকক্ষে মেলা আয়োজনে জড়িত সব প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে এক প্রস্তুতি সভায় বসেন তিনি।

সেখানে ক্ষোভের কথা জানান প্রথমবারের মতো মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাওয়া এই প্রতিমন্ত্রী।

“গ্রন্থমেলা আমার জন্য প্রথম পরীক্ষা। সে হিসেবে আজ সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গ্রন্থমেলার যে সার্বিক ব্যবস্থাপনা দেখেছি, তাতে আমি খুশি হতে পারিনি। যাই হোক, আমাদের হাতে সময় খুব কম। ২৪ ঘণ্টাকে এখন ৪৮ ঘণ্টা বানিয়ে কাজ করতে হবে।”

আগামী ১ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমি চত্বরে অমর একুশে বইমেলা উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সেদিন তিনি ‘সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইনটেলিজেন্স ব্রাঞ্চ: ফাদার অব দ্য নেশন শেখ মুজিবুর রহমান’ এর দ্বিতীয় ভলিউমের মোড়ক উন্মোচন করবেন। একইসঙ্গে মিশরের লেখক মুহসেন আল আরিসির ‘শেখ হাসিনা: যে রূপকথা শুধু রূপকথা নয়’ বইটিরও মোড়ক উন্মোচন করবেন তিনি।

বুধবার প্রস্তুতি সভায় অংশ নেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব আবু হেনা মোস্তফা কামাল, বাংলা একাডেমির নবনিযুক্ত মহাপরিচালক হাবিবুল্লাহ সিরাজী।

এছাড়া সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পাশাপাশি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, ডিএমপি, ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবিবুল্লাহ সিরাজী জানান, এবার বইমেলা থেকে প্রতিদিন অন্তত পাঁচটি বই বেছে নেবে একাডেমি। পরে সে বইয়ের লেখককে নিয়ে আসা হবে একাডেমিতে প্রথমবারের মতো চালু করা ‘লেখক বলছি’ কর্নারে।

“মাসব্যাপী এই আয়োজনটি চলবে আমাদের। এ কর্নারে দর্শক, পাঠকরা আসবেন। লেখককে প্রশ্ন করবেন তারা।”

এছাড়া প্রতি সপ্তাহের নির্দিষ্ট একটি দিনে তিনি বইমেলার সার্বিক বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করবেন বলে জানান মহাপরিচালক।

হাবিবুল্লাহ সিরাজী বলেন, এবারের বইমেলার থিম নির্ধারণ করা হয়েছে ‘বাহান্ন থেকে একাত্তর’; যাতে ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন পর্যায় তুলে আনা হবে। সেই থিমকে নিয়েই পরিকল্পনা হচ্ছে গ্রন্থমেলার সার্বিক সাজসজ্জার।

“অবকাঠামোকে সৌর্যমণ্ডিত করতে সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছি আমরা। এবার এটাকে নতুন পর্ব বলা যেতে পারে। বায়ান্নর চেতনাকে সামনে রেখে সম্পৃক্ত করা হবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতা স্তম্ভকেও’- বলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক।

২০১৮ সালের মেলায় ৪৫৯১টি বইয়ের মধ্যে ৪৮৮টিকে মানসম্পন্ন বলেছিল বাংলা একাডেমি।

সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মহাপরিচালক বলেন, “মেলার বইয়ের মানের প্রশ্নে দুটি প্রতিষ্ঠান কিন্তু জড়িত। পুস্তক প্রকাশক সমিতি ও জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি। কিন্তু দায়টা চলে আসে বাংলা একাডেমির কাঁধে। বইয়ের মানের প্রশ্নে কঠোর অবস্থানে যেতে গেলে দুই সমিতির তাদের স্বার্থ রক্ষায় নানা আবদার করে বসে। স্টল বরাদ্দ নিয়েও তাদের মধ্যে এক অসুস্থ প্রতিযোগিতা রয়েছে।”

বুধবার বিকালে লটারির মাধ্যমে প্রকাশনা সংস্থাগুলোকে স্টল বরাদ্দ দেওয়ার কথা রয়েছে বাংলা একাডেমির। এরপর মেলার চূড়ান্ত নকশা প্রণয়ন, মেলায় অংশ নেওয়া প্রকাশনা সংস্থার সংখ্যা জানাবে বাংলা একাডেমি।