আতাউস সামাদ স্মারক বৃত্তি পেলেন ঢাবির পাঁচ শিক্ষার্থী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের পাঁচ শিক্ষার্থীকে ‘আতাউস সামাদ স্মারক বৃত্তি’ দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Jan 2019, 02:34 PM
Updated : 20 Jan 2019, 02:34 PM

এছাড়া কলামনিস্ট আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীকে ‘আতাউস সামাদ স্মারক ট্রাস্ট আজীবন সম্মাননা' দেওয়া হয়েছে।

রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের অধ্যাপক মুজাফ্ফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই সম্মাননা ও বৃত্তি প্রদান করেন।

বৃত্তিপ্রাপ্ত পাঁচ শিক্ষার্থী হলেন- স্নাতক ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের  মো. নাজমুল হুসাইন, মোস্তফা মো. তাহান, তারেক আল হাসান, ইশরাতুল জাহান শোভা ও ইসতিয়াক আহমেদ।

এদের মধ্যে তারেক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাবেরী গায়েনের সভাপতিত্বে ও অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ‘সংবাদপত্রে কলাম: তাৎপর্য ও শৈলী’ শিরোনামে স্মারক বক্তৃতা দেন বিভাগের সাবেক শিক্ষক ও সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার অধ্যাপক মো. গোলাম রহমান।

তিনি বলেন, “সংবাদ পরিবেশনা, সম্পাদকীয় নীতিমালা এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বিষয়ে প্রায়ই আলোচনা হতে দেখা যায়। কিন্তু সংবাদপত্রের কলাম নিয়ে খুব বেশি আলোচনা না হলেও একটি সংবাদপত্রের জনপ্রিয়তা এবং তার প্রভাব নির্ভর করে সেই সংবাদপত্রের কলাম কতখানি জনপ্রিয় এবং জনমনে তা কতখানি প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে তার ওপর।”

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, “বৈচিত্র্যের মধ্যে একতা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটা আমাদের এই বার্তা দেয় যে, আমাদের মধ্যে বৈচিত্র্য থাকবে, বিভিন্ন পরিচয় থাকবে, মত থাকবে, ভিন্ন ভিন্ন আদর্শের মানুষ থাকবে, কিন্তু তার মধ্যে একটি একতা থাকবে। এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বড় দর্শন।”

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক কাবেরী গায়েন বলেন, “সাংবাদিকতায় কলাম লেখা অতীতের যে কোনো সময়ের থেকে এখন বোধহয় কঠিন। অনেকে মনে করতে পারেন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় এটা কী করে সম্ভব হয়? আগে আইয়ূব, এরশাদ বন্ধ করে দিত। কিন্তু তার সঙ্গে এখন যুক্ত হয়েছে সেল্ফ সেন্সরশিপ তথা কর্পোরেট পুঁজির বিনিয়োগ।  পত্রিকা হাউসে কেউ কেউ বলেন, সব ঠিক আছে ভূম্যিদস্যু লিখবেন না, গার্মেন্ট লিখবেন না, কেউ কেউ বলেন আর সব ঠিক আছে গ্রামীণ ফোন নিয়ে কিছু না বললে হয়।

“পত্রিকাগুলোতে কর্পোরেট পুঁজি একটা ব্যাপার। আরেকটা ব্যাপার যখন কোনো একটি দেশে সরকার একাকী থাকে তখন তার সুবিধার সাথে সাথে কিছু কিছু অসুবিধাও থাকে। যখন কোনো কার্যকর বিরোধী দল থাকে না তখন সাংবাদিকদের, কলামনিস্টদের অনেক দায়িত্ব। তারা যেন বস্তুনিষ্ঠভাবে, সঠিক সমালোচনার মাধ্যমে এই দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।"

শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী অনুষ্ঠানে আসতে পারেননি। টেলিফোনে যুক্ত হয়ে তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিতদের উদ্দেশে কথা বলেন। তার নিকটজন দৈনিক কালের কন্ঠের ফিচার সম্পাদক আলী হাবিব তার পক্ষে আজীবন সম্মাননার ক্রেস্ট ও পুরস্কার গ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী সাহস মুস্তাফিজ রবীন্দ্র সংগীত ‘বসে আছি কবে শুনিব তোমারই বাণী’ পরিবেশন করেন।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে কবি আসাদ চৌধুরী, অর্থনীতির অধ্যাপক আবুল বারকাত, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আহাদুজ্জামান মো. আলী, অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, অধ্যাপক মফিজুর রহমান ও প্রয়াত সাংবাদিক এবিএম মূসার দুই মেয়ে উপস্থিত ছিলেন।