জঙ্গিবাদের মামলায় লেকহেডের আগের মালিক রিজওয়ান গ্রেপ্তার

জঙ্গিবাদ প্রচারের অভিযোগে ঢাকার গুলশান এলাকার লেকহেড গ্রামার স্কুলের আগের মালিক রিজওয়ান হারুনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকও নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Jan 2019, 01:29 PM
Updated : 20 Jan 2019, 03:22 PM

গোয়েন্দা পুলিশের দাবি, হারুন আল-কায়দার আদর্শে বাংলাদেশে গড়ে ওঠা জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুসলিমিনের সক্রিয় সদস্য।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার ফজলুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রোববার ভোর ৬টায় ধানমন্ডি ৬/এ এলাকায় ঈদগা মসজিদের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”

তবে রিজওয়ানের সন্ধান না পেয়ে দুই বছর আগে বনানী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন তার বাবা হারুন রশীদ।

২০১৭ সালের ১৫ মে করা ওই জিডিতে বলা হয়, ১১ মে বিকালে বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউতে একটি কালো রংয়ের গাড়িতে রিজওয়ানকে তুলে নেওয়া হয়েছিল। এরপর থেকে তার মোবাইল ফোনও বন্ধ।

গ্রেপ্তারের খবর আসার পর রিজওয়ানের পরিবারের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তারা সবাই বিদেশে বলে জানা গেছে।

পুলিশ জানায়, রিজওয়ান হারুন ২০০৬ সালে গুলশানের লেকহেড গ্রামার স্কুলটি এর প্রতিষ্ঠাতা আবদুল লতিফের কাছ থেকে কিনে নিয়েছিলেন। ২০১৭ সালে তা বিক্রি করে দেন খালেদ হাসান মতিন নামে আরেকজনের কাছে।

শিক্ষার আড়ালে জঙ্গিবাদ প্রচারের অভিযোগ ওঠার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০১৭ সালে লেকহিড স্কুলটি বন্ধ করে দিয়েছিল।

লেকহিড স্কুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার সময় থেকে রিজওয়ানের উপর পুলিশের নজর ছিল বলে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান।

ফজলুর রহমান বলেন, “সেখানে তারা কোমলমতি শিশুদের ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে জঙ্গি মতাদর্শে গড়ে তুলতে চাইছিল। পুলিশ তা জানতে পারলে ২০১৭ সালে খালেদ হাসান মতিনের কাছে প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করে দিয়েছিল রেজওয়ান হারুন।”

জঙ্গি তৎপরতায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক বছর আগে গুলশান থানায় রিজওয়ানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা হয়েছিল। তাকে সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

জামায়াতুল মুসলিমিন নামে সংগঠনটি পুলিশের ‘কালো তালিকা’য় রয়েছে বলে জানান গোয়েন্দা কর্মকর্তা ফজলুর।

তিনি বলেন, “রিজওয়ান হারুনসহ এই জঙ্গি সংগঠনের অন্যান্য সদস্যরা ঢাকার বিভিন্ন বাসা, মসজিদ এবং নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন হারুন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের নিজস্ব অফিস তাদের কার্যক্রমের জন্য ব্যবহার করত।”

এই সংগঠনের অন্য সদস্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ওই মামলায় রিজওয়ানকে ১০ দিন হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন নিয়ে রোববার ঢাকার আদালতে যান তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক রবিউল আলম।

শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াছির আহসান চৌধুরী পাঁচ দিন হেফাজতের আদেশ দেন।

আসামির পক্ষে আইনজীবী কলিমুল্লাহ মজুমদার জামিনের আবেদন করলেও তা নাকচ করেন বিচারক।