এসএসসির এক মাস কোচিং সেন্টার বন্ধ

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরুর সাত দিন আগ থেকে শেষ পর্যন্ত দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Jan 2019, 11:27 AM
Updated : 20 Jan 2019, 03:29 PM

মাধ্যমিক পরীক্ষা সামনে রেখে রোববার সচিবালয়ে জাতীয় মনিটরিং ও আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কমিটির বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

দীপু মনি বলেন, “এবার ২৭ জানুয়ারি থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।”

প্রায় সব ধরনের পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগের মধ্যে গতবছরও এসএসসির তিন দিন আগ থেকে পরীক্ষা শেষ হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল সরকার।

সে প্রসঙ্গ টেনে দীপু মনি বলেন, “২০১৮ সালে সরকার যে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল তার ফলে কোনো পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটেনি। এবারও সুষ্ঠু পরিবেশে যেন পরীক্ষা হয় এবং কোনো ধরনের প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা যাতে না ঘটে, সেজন্য অতীত অভিজ্ঞতা থেকে আমরা সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।”

এ বছর চার হাজার ৯৬৪টি কেন্দ্রে ২৫ লাখ ৭৩ হাজার ৮৫১ জন শিক্ষার্থী মাধ্যমিক পর্যায়ের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেবে।

আগামী ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি হবে তত্ত্বীয় পরীক্ষা। আর ২৬ ফেব্রুয়ারি সংগীত বিষয়ের এবং ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ১২ মার্চের মধ্যে অন্য বিষয়ের ব্যবহারিক পরীক্ষা হবে।

এবারও বহু নির্বাচনী (এমসিকিউ) অংশের উত্তর আগে দিতে হবে। পরে নেওয়া হবে সৃজনশীল/রচনামূলক অংশের পরীক্ষা।

প্রশ্নপত্র সরবরাহের ক্ষেত্রে এবার অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল দিয়ে বিশেষ নিরাপত্তা খাম তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “এটা নিশ্চিত করবে যে এই (প্রশ্নের) খাম কখনও খোলা হয়নি। পরীক্ষার হলে যখন খোলার কথা, তার আগে খোলা হয়নি- সেটি নিশ্চিত করবে।”

মন্ত্রী বলেন, “অতীতে যতটা না প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে তার চেয়ে বহুগুণ বেশি গুজব রটনার ঘটনা ঘটেছে। কাজেই প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী বা গুজব রটনাকারী কেউ যদি থাকে, কোনোভাবে এটি সনাক্ত হয়, তাদের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”

এবারের এসএসসি পরীক্ষা সামনে রেখে ইতোমধ্যে ‘তীক্ষ্ণ গোয়েন্দা নজরদারি’ শুরু হয়েছে জানিয়ে দীপু মনি বলেন, “ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে প্রশ্নপত্র ফাঁসের মত ঘটনাগুলো অতীতে ঘটতে দেখেছি, সে সমস্ত জায়গায় তীক্ষ্ণ গোয়েন্দা নজরদারি করা হচ্ছে। তাদের ব্যাপারে আমারা কঠিন ব্যবস্থা নেব।

“আমরা বিশ্বাস করি, এই দেশে জঙ্গি দমন করতে পেরেছি। মাদককে দমন করবার জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কাজেই পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস… আমাদের নতুন প্রজন্মের শিক্ষাজীবনকে নষ্ট করার জন্য যারা অপচেষ্টা চালায়, তাদের বিরুদ্ধেও একই ধরনের কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”

পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্বের সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্টতা ছাড়া অন্য কেউ কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না জানিয়ে দীপু মনি বলেন, কোনোভাবে কেউ মোবাইল ফোন নিয়ে ঢুকতে পারবেন না। যারা প্রশ্নপত্র বহন করে নিয়ে যাবেন, তারাও মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না। কেবল কেন্দ্রসচিব একটি মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন, যাতে কোনো ধরনের ছবি তোলার ব্যবস্থা বা ইন্টারনেট সংযোগ থাকবে না।

মন্ত্রী বলেন, পরীক্ষা শুরু হওয়ার ৩০ মিনিট আগে প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকে হলে প্রবেশ করতে হবে, এরপর ঢুকতে দেওয়া হবে না।

“যদি অনিবার্য কারণবশত হয়, সেক্ষেত্রে তাদের নাম, রোল, প্রবেশের সময়, দেরি হওয়ার কারণসহ সমস্ত কিছু রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করে সাথে সাথে শিক্ষা বোর্ডে পাঠাতে হবে।”

ফেইসবুকে প্রশ্ন ফাঁসের গুজব রুখতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, গুজব রটনা প্রতিরোধে বিটিআরসি ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সেল দায়িত্ব পালন করবে।

অন্যদের মধ্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর ছাড়াও জাতীয় মনিটরিং ও আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কমিটির সদস্যরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।