গুনী এই নাট্যকারের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার সন্ধ্যার পর বাংলা একাডেমির আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে আনন্দ আয়োজন করে ‘অধ্যাপক মমতাজউদদীন আহমদ ৮৫তম জন্মদিন উদযাপন জাতীয় পর্ষদ’।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবিবুল্লাহ সিরাজীর সভাপতিত্বে এই আয়োজনে উপস্থিত হন ভাষা সৈনিক কামাল লোহানী, সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, নাট্যকার মামুনুর রশীদ, নওয়াজেস আলী খানসহ অনেকে।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই মমতাজউদদীন ফুল, উত্তরীয়, ক্রেস্ট ও পোর্টেট দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
অনুষ্ঠানের আলোচনা পর্বে মমতাজউদদীন আহমদের নাটকে অভিনয় করা আসাদুজ্জামান নূর বলেন, “মমতাজ স্যারের ৮৫তম জন্মদিন। স্যারকে নিয়ে অনেক কথা বলার আছে। বিশাল পটভূমি জুড়ে তার উপস্থিতি। তিনি তার নাটকের মধ্য দিয়ে দেশ, দেশের মানুষ ও বাঙালির অসাম্প্রদায়িকতার কথা বলেছেন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আমরা যখন চট্টগ্রামে নাটক করতে যেতাম তখন স্যার আমাদের ভুল ধরতেন না বরং উৎসাহ দিতেন।
রামেন্দু মজুমদার বলেন, “অধ্যাপক মমতাজউদদীন আহমদ নাটকপাগল একজন মানুষ। নাটক ও লেখার জন্য যখন যেখানে যেতেন সেখানে সবাইকে মাতিয়ে রাখতেন। তিনি যতদিন বেঁচে থাকবেন লেখার চেষ্টা করবেন। তাহলে আমরা উপকৃত হব। এই জন্মদিনে তার নিরোগ জীবন কামনা করি।"
হাবিবুল্লাহ সিরাজী বলেন, “জন্মদিনে মমতাজউদদীন আহমদকে নানান পেশার মানুষ শুভেচ্ছা জানাতে এসেছে। এত পেশার মানুষ যখন একজন মানুষকে শুভেচ্ছা জানাতে আসেন তখন তাকে একজন মনীষী হয়ে উঠতে হয়। আমি বিবেচনা করি মমতাজউদদীন আহমদ একজন মনীষী পর্যায়ের মানুষ। তিনি আজীবন যে কাজ করে গেছেন তা ধারণ করাই হবে তার প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন।”
তিনি বলেন, “আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করতে চাই, প্রতিবছর একজন নাট্যকর্মীকে আব্বার নামে একটা পুরষ্কার দিতে চাই আমরা। আব্বার ইচ্ছা অনুযায়ী 'বাংলাদেশের পক্ষের' একজন নাট্যকর্মীকে এক লক্ষ টাকা সমমূল্যের পুরস্কার দিতে চাই।"
“২৬ মার্চ কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে জিয়াউর রহমানের কণ্ঠে যে স্বাধীনতার ঘোষণা এসেছিল সেটার বাংলা অনুবাদ করে দিয়েছিলেন অধ্যাপক মমতাজউদদীন আহমদ। স্বৈরাচারী এরশাদের সময়ে রওশন এরশাদের সামনেই স্বৈরাচারবিরোধী নাটকের মধ্য দিয়ে তিনি প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন।"
“কিন্তু আমার পরিবার ও গুণগ্রাহীরা আমাকে বেঁচে থাকতে বলেন। দেশের এই ধুলিকণা আমার ছেড়ে যেতে ভালো লাগে না। আরও বাঁচতে ইচ্ছা করে। আমি একজন সামান্য মানুষ। আপনাদের যে ভালোবাসা পেলাম তার যোগ্য আমি নই। এটাই হয়ত আপনাদের সামনে আমার শেষ আসা। সবাই আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন।"