বিজিবি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে মারধরের অভিযোগ

পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলনের মধ্যে সাভারে দায়িত্ব পালন করতে যাওয়া ঢাকার একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে সেখানে নিয়োজিত একজন বিজিবি কর্মকর্তা মারধর করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গোলাম মুজতবা ধ্রুব নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Jan 2019, 05:33 PM
Updated : 14 Jan 2019, 05:18 AM

মো. রাজিবুল ইসলাম নামের ওই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে হয়েছে বলে তার একজন সহকর্মী জানিয়েছেন।

তবে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিজিবি কর্মকর্তা মেজর রহমত।

এদিকে ঘটনার প্রতিকার চেয়ে রাজিবুল ঢাকার জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। তার ওই অভিযোগের একটি অনুলিপি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম হাতে পেয়েছে।

সরকারি কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এই ঘটনায় দোষী বিজিবি কর্মকর্তার শাস্তি দাবি করেছে।

নতুন মজুরি কাঠামোর অসঙ্গতি নিয়ে ক্ষুব্ধ পোশাককর্মীরা গত কয়েকদিন ধরে বিক্ষোভ করছেন। সাভারে তাদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাঁধার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে বিজিবি মোতায়েন করা হয়।

লিখিত অভিযোগে রাজিবুল বলেছেন, রোববার সকালে সাভারের আল মুসলিম গার্মেন্টের শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য তিনি সেখানে যান। উলাইল এলাকার ওই গার্মেন্টেই বিজিবির ৫ নম্বর সেক্টরের মেজর রহমত তার উপর চড়াও হয়েছিলেন।

রাজিবুলের ভাষ্য, বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের উপর ওই বিজিবি কর্মকর্তা গুলি চালাতে বললে তিনি আইন মেনে তার অনুমতি নেওয়ার কথা বলেন। তা নিয়ে বাকবিতণ্ডা বাঁধে।

“একজন কনিষ্ঠ ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে একজন বিজিবি কর্মকর্তাকে ‘আইন দেখাচ্ছি’ কি না জানতে চেয়ে তিনি উত্তেজিত হয়ে পড়েন, এক পর্যায়ে তিনি আমাকে কিলঘুষি মারতে থাকেন ও অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন।”

তার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিজিবি কর্মকর্তা মেজর রহমত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।”

এর বেশি কিছু বলতে অপারগতা জানিয়ে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।

তখন যোগাযোগ করা হলে আইএসপিআরের পরিচালক আলমগীর কবির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আইএসপিআর কিছু বলবে না। কারণ বিজিবি স্বতন্ত্র একটি ফোর্স। তারাই এই বিষয়ে কিছু বলতে পারবেন।”

বিজিবির জনসংযোগ বিভাগের কর্মকর্তা মহসিন রেজার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এ বিষয়ে তার কিছু জানা নেই।

তিনি আবার বিজিবির অতিরিক্ত মহাপরিচালক খন্দকার ফরিদ হাসানের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। তবে বেশ কয়েকবার ফোনে চেষ্টা করেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এদিকে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও পানিসম্পদ সচিব কবীর বিন আনোয়ার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, এ নিয়ে তদন্ত চলছে। পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন এলে আমরা দেখব।”

প্রাথমিক তদন্তে ওই বিজিবি কর্মকর্তার নাম এসেছে জানিয়ে এই সচিব বলেন, “তদন্তে দোষ পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা হবে, দায়ী ব্যক্তির শাস্তি হবে।”