পুলিশের রিমান্ড ও অপুর জামিন আবেদনের শুনানি করে ঢাকার মহানগর হাকিম সারাফুজ্জামান আনসারী বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেন।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে শরীয়তপুর-৩ (ডামুড্যা-ভেদরগঞ্জ-গোসাইরহাট) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী অপুকে গত ৪ জানুয়ারি রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
পরে তাকে নির্বাচনের আগে মতিঝিল থেকে আট কোটি টাকা উদ্ধারের ঘটনায় মুদ্রা পাচার ও সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক আশরাফুল ইসলাম বৃহস্পতিবার অপুকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, “এ আসামি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ ও দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য সমগ্র কার্যক্রম পরিচালনা করার মূল হোতা ও নিয়ন্ত্রক। তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার করাসহ ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।”
শুনানি শেষে বিচারক জামিন নাকচ করে অপুকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।
ভোটের মাত্র চার দিন আগে মতিঝিলে ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজ ও ইউনাইটেড করপোরেশনে অভিযান চালিয়ে ওই কোম্পানির এমডি এ এম আলী হায়দারকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। ওই প্রতিষ্ঠান থেকে ৩ কোটি ১০ লাখ ৭৩ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।
পরে হায়দারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পল্টনের হাউজ বিল্ডিং রোডের বায়তুল খায়ের টাওয়ারের সিটি মানি এক্সচেঞ্জ থেকে আরও ৫ কোটি টাকা জব্দ করা হয়।
এছাড়া গুলশানে অপুর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান আমেনা এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড থেকে ৪ লাখ ৬৫ হাজার ৬৫০ টাকাসহ জয়নাল আবেদীন এবং আলমগীর হোসেন নামে আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
সে সময় র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, হায়দারের মামা ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান শরিয়তপুর-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী অপুর ঘনিষ্ঠ বন্ধু। নির্বাচনে প্রভাব খাটানোর জন্য বিদেশ থেকে দেড়শ কোটি টাকা হুন্ডির মাধ্যমে আনা হয়, তার মধ্যে সাড়ে ৩ কোটি টাকা অপুর কাছে পাঠানো হয়।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি নূর উদ্দিন আহমেদ অপু এক সময় খালেদা জিয়ার ছেলে তারেকের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করতেন।
দণ্ড নিয়ে যুক্তরাজ্যে থাকা তারেক কয়েক বছর আগে লন্ডন থেকে সৌদি আরবে ওমরাহ পালনে গেলে তার সঙ্গে তখনও অপুকে দেখা গিয়েছিল।
গত ২৪ ডিসেম্বর ভোটের প্রচারের সময় সংঘর্ষে আহত হয়ে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন অপু। ৪ জানুয়ারি গ্রেপ্তার করার পর তাকে সেখানে রেখেই চিৎিসা দেওয়া হয়। এ কারণে গ্রেপ্তারের ছয় দিন পর তাকে আদালতে হাজির করা হয়েছে বলে রিমান্ড আবেদনে জানানো হয়।