
সমস্যার সমাধান দ্রুতই করছি: শ্রম প্রতিমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 09 Jan 2019 11:01 PM BdST Updated: 10 Jan 2019 01:29 AM BdST
-
সংবাদ সম্মেলনে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ান
মজুরি নিয়ে পোশাক শ্রমিকদের যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে, তার সমাধানে দ্রুত কাজ করার কথা জানিয়ে সবাইকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান।
মজুরি কাঠামো পর্যালোচনায় একদিন আগে কমিটি গঠনের পরও শ্রমিকদের বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার রাতে ঢাকায় নিজের সরকারি বাড়িতে ‘জরুরি’ সংবাদ সম্মেলন করে এই আহ্বান জানান তিনি।
মন্নুজান বলেন, “আমি এটুকু নিশ্চিত করতে পারি যে একজন শ্রমিক এখন যে মজুরি পাচ্ছেন, তা নতুন বেতন কাঠামোর কারণে কোনো অবস্থাতেই কমবে না। কারণ যখন ইনক্রিমেন্টের মাধ্যমে একজন শ্রমিকের মজুরি বাড়ে, তা কনভেনশন হয়ে যায়। এই মজুরি আর কমানোর কোনো সুযোগ থাকে না।
“বর্তমানে কয়েকটি গ্রেডে যে সমস্যা দেখা দিয়েছে, তার সমাধানও হবে। এটা প্রিন্টিং মিসটেকও হতে পারে, আবার যোগ-বিয়োগের ভুলও হতে পারে। দ্রুত যাতে সমস্যার সমাধান হয়, আমরা সেই চেষ্টাই করছি।”
নতুন সরকারের শপথ নেওয়ার পরপরই গত কয়েকদিন ধরে ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভের প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার ত্রিপক্ষীয় এক সভায় নতুন মজুরি কাঠামো পর্যালোচনায় কমিটি গঠন হয়।
মালিক পক্ষের পাঁচজন, শ্রমিক পক্ষের পাঁচজন এবং সরকারের বাণিজ্য সচিব ও শ্রম সচিবকে নিয়ে ১২ সদস্যের এই কমিটি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার এই কমিটি প্রথম বৈঠকে বসবে বলে শ্রম প্রতিমন্ত্রী জানান।
তিনি বলেন, “আমি আজ সারাদিন এটা নিয়ে কাজ করেছি। কালকে বিকাল ৩টায় প্রথম বৈঠকের ব্যবস্থা করেছি। সবার কথা শোনা হবে। বেতন কাঠামোতে বেসিক অথবা গ্রস এর মধ্যে কোথাও অসঙ্গতি থাকলে সেটা মেটানো হবে।”

ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন দাবিতে মঙ্গলবার মিরপুরের কালশীতে ২২ তলা গার্মেন্টসের সামনের রাস্তায় বিক্ষোভ করে পোশাক শ্রমিকরা। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি
এই বৈঠকেই উদ্ভুত সমস্যার সমাধান আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন খুলনার খালিশপুরের শ্রমিক আন্দোলন থেকে উঠে আসা মন্নুজান।
“হতে পারে যে আগামীকালকের বৈঠক থেকেই একটা সমাধান চলে এসেছে। এরপরও সমাধান না হলে আমাদের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা আছেন। তিনি অত্যন্ত শ্রমিকবান্ধব। আমরা এটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইব।”
বিক্ষোভের সময় কয়েকজন শ্রমিক আহত হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী।
দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি আট হাজার টাকা নির্ধারণ করে গত ২৫ নভেম্বর গেজেট প্রকাশ করে সরকার। ডিসেম্বরের ১ তারিখ থেকে তা কার্যকর করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল সেখানে। অর্থাৎ জানুয়ারির বেতন নতুন কাঠামোয় পাবেন শ্রমিকরা।
কিন্তু গত রোববার ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশমুখ বিমানবন্দর সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন কয়েকটি কারখানার পোশাক শ্রমিকরা। এরপর প্রতিদিনই তারা রাস্তা আটকে বিক্ষোভের চেষ্টা করছেন। সাভার, আশুলিয়া ও নারায়ণগঞ্জের শ্রমিকরাও নামেন বিক্ষোভে, যা সংঘাতেও রূপ নেয়।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, সরকার তাদের জন্য যে নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণ করে দিয়েছে, মালিকপক্ষ সে অনুযায়ী বেতন দিচ্ছে না। বরং তাদের নানাভাবে ‘অন্যায়-অবিচারের’ শিকার হতে হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের নতুন সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান মঙ্গলবার বিকালে গার্মেন্ট মালিক, শ্রমিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন।
দুই ঘণ্টা বৈঠকের পর বেরিয়ে এসে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানান, দেড় মাস আগে ঘোষিত নতুন মজুরি কাঠামো পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
পোক শিল্প মালিক টিপু মুনশি শ্রমিকদের ঘরে ফেরার আহ্বান জানালেও বুধবার সকাল থেকেও ঢাকা ও সাভারের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভে নামে শ্রমিকরা।

সাভারের কর্ণপাড়ায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক থেকে আন্দোলনত পোশাক শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান বলেন, শ্রমিকদের বিক্ষোভের মধ্যে যে ভাংচুর-বিশৃঙ্খলা হচ্ছে, তাতে তৃতীয় পক্ষের কোনো ইন্ধন থাকতে পারে।
“আজকের যে অসন্তোষ, এর পেছনে কেউ না কেউ কলকাঠি নাড়ছে। তৃতীয় কোনো পক্ষ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য এটা করছে।
“আমি শ্রমিকদের বলব, আপনারা শান্ত হন। গার্মেন্টের ক্ষতি হলে মালিকের চেয়ে শ্রমিকরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শিল্প ধ্বংস করে, রাজপথ অবরুদ্ধ করে কোনোদিন সমাধান হবে না। আলোচনার টেবিলে এসে সমস্যার সমাধান করতে হবে।”
আগের সরকারের শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নুও গত ডিসেম্বরে বলেছিলেন, নতুন কাঠামোতে পোশাক খাতের প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিকের মজুরি আগের চেয়ে গড়ে ৫১ শতাংশ বাড়লেও ‘বিভিন্ন রকম’ ব্যাখ্যা দিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে ‘অসন্তোষ সৃষ্টির চেষ্টা’ চলছে।
নির্বাচনের আগে পোশাক শ্রমিকদের অসন্তোষের সুযোগে কেউ যাতে ‘রাজনৈতিক ফায়দা’ নিতে না পারে, সেজন্য ডিসেম্বরে গার্মেন্ট শিল্প প্রধান এলাকাগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাড়তি নজরদারি ছিল।
মঙ্গলবারের বৈঠকের পর টিপু মুনশি বলেছিলেন, “যারা ধ্বংসাত্মক কাজ করেছে, তারা শ্রমিক না। তারা এই ট্রেডের বন্ধু না। তাদের কঠোর হাতে দমন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান বলেছিলেন, “প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত শ্রমিক বান্ধব। তিনি নিজেই সুপারিশ করে পোশাক শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর ব্যবস্থা করেছেন। এখন নতুন মজুরি কাঠামোর কোথাও কোনো অসুবিধা থাকলে আলোচনা করে তা ঠিক করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাই আর কোনো বিশৃঙ্খলা নয়। সবাইকে কাজে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করছি।”
আরও পড়ুন
WARNING:
Any unauthorised use or reproduction of bdnews24.com content for commercial purposes is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action.
- গ্যাসের অভাবে রান্নায় দুর্ভোগ
- আমিরাত প্রবাসীদের দেশে বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
- নাওমি ওয়াতানাবের ‘সবটুকু জুড়েই এখন বাংলা’
- উপজেলা ভোট: ৩৩ একক প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ার পথে
- চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব নির্বাচনের বাধা কাটলো
- জগন্নাথ ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটি এবার বিলোপ
- জবিতে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ২
সর্বাধিক পঠিত
- পুলিশ অভদ্রতা করেনি: সালমান মুক্তাদির
- আমি দেশের ‘শ্রেষ্ঠ হনুমান’: এটিএম শামসুজ্জামান
- ৫ সেঞ্চুরিতেও আশরাফুলের ১৫ লাখ যে কারণে
- নেই মিঠুন, খেলতে পারেন মুশফিক
- তামিমের দুর্ভাবনা প্রথম ১০ ওভার
- বিশ্বকাপ দিয়েই গেইলের বিদায়
- রাজ্জাকের ক্ষমা চাওয়াকে সাধুবাদ কামালের
- ভারত হামলা করলে পাকিস্তানও জবাব দেবে: ইমরান
- ভালো উইকেটে ভালো কিছুর আশায় মাশরাফি
- ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে কে কোন দলে