তাদের কর্মবিরতির দ্বিতীয় দিন বুধবার ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ কমিশনার মুস্তাক আহমেদ ডিপোতে গিয়ে কর্তৃপক্ষের প্রতিশ্রুতির কথা জানিয়ে শ্রমিকদের কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।
ডিপোর ব্যবস্থাপক মো. নূর-ই-আলম বলেন, দুপুর ১টার মধ্যে কর্মীদের হাতে এক মাসের টাকা দেওয়া হবে। ৩১ জানুয়ারির মধ্যে তারা পাবেন আরও এক মাসের টাকা। এরপর জুলাই পর্যন্ত প্রতি মাসের বেতনের সঙ্গে ধাপে ধাপে বাকি টাকা পরিশোধ করবে বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ।
এই প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পর আন্দোলনরত চালক ও শ্রমিকরা বেলা পৌনে ১২টার দিকে ধর্মঘট তুলে নেওয়ার ঘোষণা দেন এবং এরপর ডিপো থেকে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যান।
বিআরটিসির জোয়ারসাহারা ডিপোতে একতলা, দ্বিতল এবং শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মিলিয়ে ১২০টি সচল বাস রয়েছে। এসব যানবাহনের আয় থেকেই কর্মীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয়। কিন্তু কয়েক বছর ধরে লোকসানের কারণে প্রায় ৫০০ কর্মীর বেতন অনিয়মিত হয়ে পড়ে।
সেই বকেয়া পরিশোধের দাবিতে মঙ্গলবার ভোরে জোয়ারসাহারা ডিপোর প্রধান ফটকে তালা দিয়ে কর্মবিরতি শুরু করেন চালক ও শ্রমিকরা।
তাদের এই আন্দোলনের কারণে বুধবার দুপুর পর্যন্ত টঙ্গী-মতিঝিল, আবদুল্লাহপুর-মতিঝিল, কুড়িল বিশ্বরোড-পাঁচদোনা রুটে বিআরটিসির একতলা ও দোতলা বাস এবং কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের স্টাফ বাস চলাচল বন্ধ থাকে।
এই পরিস্থিতিতে সকালে ডিপোতে গিয়ে ধর্মঘটীদের সঙ্গে আলোচনা করেন পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ কমিশনার মুস্তাক আহমেদ।
পরে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিআরটিসি চেয়ারম্যান আমাকে গতকাল পরিস্থিতি জানিয়েছিলেন। আমি এসে তাদের সাথে কথা বলেছি। প্রতিশ্রুতি পেয়ে শ্রমিকরা উঠে গেছে।”
এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “এ ধরনের সমস্যা আমাদের কারও কাম্য নয়। আমি চালক ও কর্মীদের বলেছি, তারা যেন বকেয়া পরিশোধের সর্বশেষ পরিস্থিতি আমাকে জানায়। আমিও খবর রাখব।”
বকেয়া বেতনের দাবিতে গতবছর জুলাই মাসেও একবার আন্দোলনে নেমেছিলেন জোয়ার সাহারা ডিপোর বাস চালকরা। তখন তাদের ১০ মাসের বেতন বকেয়া ছিল।
সারাদেশে বিআরটিসির ২২টি ডিপো আছে। এর মধ্যে ঢাকায় ডিপো আছে ছয়টি। এসব ডিপোতে প্রায় তিন হাজার চালক, টেকনিশিয়ান, অফিস সহকারী এবং নিরাপত্তারক্ষী কাজ করেন। সরকারি বেতন স্কেলে তারা তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী।
জোয়ার সাহারার মত ঢাকার অন্যান্য ডিপোতেও কর্মীদের বেতন কমবেশি বকেয়া রয়েছে বলে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন।