পলকের ঝলক ছিল, হেলমেট ছিল না

মোটর বাইকে চড়ে সময়মতো কার্যালয়ে গিয়ে প্রশংসিত হলেও হেলমেট না থাকায় সমালোচনার মুখে পড়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Jan 2019, 01:19 PM
Updated : 10 Jan 2019, 10:01 AM

নতুন সরকারে শপথ নেওয়ার পর দিন মঙ্গলবার দুপুরে আগারগাঁওয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগে দ্রুত যেতে তিনি মোটরবাইকে সওয়ার হয়েছিলেন।

মোটরবাইকে চেপে অফিসযাত্রার ছবি নিজের ফেইসবুক একাউন্টের টাইমলাইনেও পোস্ট করেন পলক।

তাতে তাকে হেলমেট ছাড়া অবস্থায় দেখে সমালোচনা করেন অনেকে।

নিজের নতুন সরকারের সদস্যদের নিয়ে মঙ্গলবার সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিতে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই যাত্রায় সংসদ ভবন থেকে সব মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা গিয়েছিলেন বাসে চেপে।

সেখান থেকে ফেরার পর সংসদ ভবন থেকে গাড়িতে করে নিজ নিজ দপ্তরে যান মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা; তবে পলক চাপেন মোটর বাইকে।

তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে তার মতবিনিময় সভার সময় নির্ধারিত ছিল দুপুর ১২টা।

প্রটোকলের গাড়ি ছেড়ে প্রতিমন্ত্রী পলক কেন মোটরবাইকে চড়ে দপ্তরে এসেছেন, তার কারণ জানিয়ে বিকালে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ।

এতে বলা হয়, সংসদ ভবন থেকে আইসিটি টাওয়ারের উদ্দেশে রওনা হয়ে পলক যানজটে পড়ে প্রটোকল ছেড়ে মোটর সাইকেলে সওয়ারী হন।

“সবাইকে অবাক করে পূর্ব নির্ধারিত সময়ে নিজ কর্মস্থলে উপস্থিত হন,” বলা হয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।

জুনাইদ আহমেদ পলক অফিসে যাওয়ার পথে মোটর বাইকে

আইনপ্রণেতা হিসেবে হেলমেট না পড়ে মোটরযান আইন ভাঙায় ফেইসবুকে পলকের পোস্টেই সমালোচনা করেন অনেকে।

এই প্রসঙ্গে পলক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তাড়াহুড়ো করে যাওয়ার জন্য আমি যে বাইকের সাহায্য নিয়েছি, তার কাছে কোনো বাড়তি হেলমেট ছিল না। আর ওটা রাইড শেয়ারিংয়ের বাইকও ছিল না, ব্যক্তিগত বাইক ছিল।”

পলকের ফেইসবুক পোস্টে ‘শিহাব এফপি’ নিক থেকে বলা হয়, “দাদা হেলমেট কোথায়...? প্রথম দিনের অফিসে যাওয়াটায় তো আইন অমান্য করছেন।”

‘আরিফ রহমান’ নিক থেকে বলা হয়, “সমালোচনা তো মন্ত্রী সাহেব নিজেই তৈরি করেন। সব পিক ফেইসবুকে দিতে হয় না। আপনার হেলমেট কোথায়? না কি মন্ত্রীদের হেলমেট লাগে না?”

‘মুক্তা মনি’ নিক থেকে বলা হয়, “ছবিটা আপনাকে যতোটা সম্মানিত করবে ভেবেছিলেন তার চেয়ে বেশি অসম্মানিত আর সমালোচিত করলো!!! সব দিক ভেবে কাজ করা উচিৎ বলে আমি মনে করি। আমরা নিজের ভুলের চেয়ে অন্যের ভুল বেশি ধরতে জানি।”

তরুণ প্রতিমন্ত্রী পলকের সময়মতো কর্মস্থলে পৌঁছনোরও প্রশংসাও এসেছে। একে ঝলক দেখানোও বলছেন কেউ কেউ।

পলক তিনটি ছবি তুলেছেন ফেইসবুকে। দুটি অফিসে যাওয়ার, যে দুটিতে তার মাথায় হেলমেট ছিল না। কিন্তু আরেকটি ছবিতে তাকে হেলমেট পরা অবস্থায় দেখা যায়, যেটি অফিস থেকে ফেরার পথের।

ফেরার পথে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের মাথায় ছিল হেলমেট

মোটরযান আইন অনুযায়ী, মোটরবাইকে হেলমেট পরা বাধ্যতামূলক।

গত বছর রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে দুই স্কুল শিক্ষার্থীর নিহত হওয়ার পর নজিরবিহীন আন্দোলনে ট্রাফিক আইন মানার বিষয়ে কঠোর হয়েছে প্রশাসন।

এদিকে আরেক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নতুন মেয়াদে কাজ শুরু করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী আইসিটি টাওয়ারে উপস্থিত হলে আইসিটি বিভাগের সচিব ও বিভিন্ন সংস্থা-দপ্তরের প্রধানরা ফুল দিয়ে তাদের বরণ করে নেন। এরপর বিভাগের সম্মেলন কক্ষে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সবাই শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, “আইসিটি বিভাগের চলমান প্রকল্পসমূহ শেষ করে নতুন নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।”

মোস্তাফা জব্বার টেকনোক্র্যাট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে একই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হলেন।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের গতবারের প্রতিমন্ত্রী পলক তৃতীয়বারের মতো নাটোর-৩ (সিংড়া) আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে আবারও একই দায়িত্ব পেয়েছেন।