নতুন এমপিদের শপথ ‘বেআইনি’ দাবি করে খোকনের নোটিস

দশম জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ীদের নেওয়া শপথ বাতিল করে গেজেট প্রকাশের দাবি জানিয়ে উকিল নোটিস পাঠিয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুবউদ্দিন খোকন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Jan 2019, 12:39 PM
Updated : 17 Jan 2019, 05:40 AM

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক খোকন মঙ্গলবার আইনজীবী তাহেরুল ইসলাম তৌহিদের মাধ্যমে স্পিকার, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে এই নোটিসটি পাঠান।

আগামী ১৩ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৯টার মধ্যে নোটিসের জবাব চেয়েছেন খোকন।

তা না হলে আদালতে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে খোকন সাংবাদিকদের বলেছেন, “এর ব্যত্যয় ঘটলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা চার দিন পর ৯ জানুয়ারি শপথ নিয়েছিলেন। বিএনপিবিহীন ওই সংসদের যাত্রা শুরু হয়েছিল ওই বছরের ২৯ জানুয়ারি। সে অনুযায়ী আগামী ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত দশম সংসদের মেয়াদ।

মেয়াদ অবসানের ৯০ দিন আগে থেকে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুসরণ করে গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়েছে একাদশ সংসদ নির্বাচন।

এই নির্বাচনে বিজয়ীরা গত ৩ জানুয়ারি সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিয়েছেন। নতুন সরকারের শপথ অনুষ্ঠানও হয়েছে ৭ জানুয়ারি।

তার একদিন বাদেই মঙ্গলবার দুপুরে রেজিস্ট্রি ডাকযোগে উকিল নোটিসটি পাঠান মাহবুবউদ্দিন খোকন।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, দশম জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে একাদশ সংসদের নবনির্বাচিত সদস্যরা শপথ নিয়ে সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন।

খোকন বলেন, “সংবিধানের ১২৩ (৩) অনুচ্ছেদে বলা আছে, প্রতি সংসদ মেয়াদোত্তীর্ণ হলে পূর্বের সংসদ সমাপ্তি না হওয়া পর্যন্ত এরা দায়িত্ব পালন করবেন। সে অনুযায়ী নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের ৩ জানুয়ারি নেওয়া শপথে সংবিধান লঙ্ঘন হয়েছে। সংবিধানের ১৪৮ (৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী শপথের জন্য নির্বাচিতদের উচিৎ ছিল ১২৩(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করা।

“ফলে এই শপথ বাতিল করার জন্য আমরা বলেছি। শপথ বাতিল পাশাপাশি নতুন করে গেজেট করতে।”

সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৪৮(৩)

এই সংবিধানের অধীন যে ক্ষেত্রে কোন ব্যক্তির পক্ষে কার্যভার গ্রহণের পূর্বে শপথ গ্রহণ আবশ্যক, সেই ক্ষেত্রে শপথ গ্রহণের অব্যবহিত পর তিনি কার্যভার গ্রহণ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে।

অনুচ্ছেদ ১২৩(৩)

তবে শর্ত থাকে যে, এই দফার (ক) উপ-দফা অনুযায়ী অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে নির্বাচিত ব্যক্তিগণ, উক্ত উপ-দফায় উল্লিখিত মেয়াদ সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত, সংসদ সদস্যরূপে কার্যভার গ্রহণ করিবেন না।

নোটিসে খোকন বলেন, “একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ নেওয়া কেবল বেআইনিই হয়নি, বেআইনিভাবে তারা তাদের পদের মেয়াদও বাড়িয়ে নিয়েছেন।

“সংবিধানের ৭২(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হবে ২৯ জানুয়ারি। তাই শপথ নেওয়া নির্বাচিতরা শুধু আইনকেই বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাননি, তারা তাদের সংসদ সদস্য পদটিকেও অকার্যকর  করে ফেলেছেন।”

এই নির্বাচনে ভরাডুবির পর বিএনপির ভোট ডাকাতির অভিযোগ তুলে পুনর্নির্বাচনের দাবি তুলেছে, তবে তা নাকচ করেছে ইসি।