নতুন সরকারের অভিষেক মঞ্চ প্রস্তুত

নতুন সরকারের মন্ত্রিসভায় কারা থাকছেন, তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আগেই; শপথের মধ্য দিয়ে তাদের অভিষেকের সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বঙ্গভবনে।

বঙ্গভবন প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Jan 2019, 06:26 AM
Updated : 7 Jan 2019, 09:46 AM

এই শপথের মধ্যে দিয়েই টানা তৃতীয়বারের মত রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। আর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা চতুর্থ মেয়াদে বাংলাদেশের সরকারপ্রধানের দায়িত্ব নিয়ে গড়তে যাচ্ছেন ইতিহাস।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টায় বঙ্গভবনের দরবার হলে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ পড়াবেন। নিয়ম অনুযায়ী প্রথমে প্রধানমন্ত্রী এবং পর্যায়ক্রমে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং উপমন্ত্রীরা শপথ নেবেন।

শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম ।রোববার তিনিই সংবাদ সম্মেলন করে ৪৭ সদস্যের নতুন মন্ত্রিসভার নাম এবং দপ্তর জানিয়ে দিয়েছেন। রেওয়াজের বাইরে গিয়ে শপথের আগে মন্ত্রীদের তালিকা প্রকাশ ছিল এবারের বড় চমক।

রাষ্ট্র পরিচালনায় এবার শেখ হাসিনার সঙ্গী হচ্ছেন ২৪ জন মন্ত্রী, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী এবং তিনজন উপমন্ত্রী। একাদশ সংসদ নির্বাচনে অভাবনীয় জয়ের পর শেখ হাসিনা তার নতুন সরকার সাজিয়েছেন মূলত নতুনদের নিয়ে।

বিদায়ী সরকারে থাকা ৩৪ জনের নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান হয়নি। নতুন সরকারের ৩১ জনই প্রথমবারের মত সরকারের দায়িত্ব পালন করতে আসছেন।

শেখ হাসিনা তার আগের তিন সরকারে শরিক দলের নেতাদের মন্ত্রী করলেও তাদের কাউকে ডাকেননি। পুরোপুরি আওয়ামী লীগের নেতাদের নিয়েই হচ্ছে তার নতুন সরকার।  

নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নিলেই ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি গঠিত পুরনো সরকারের দায়িত্ব শেষ হবে। যারা মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় উপদেষ্টা ছিলেন, মন্ত্রিসভার শপথের আগেই তাদের অব্যাহতি দেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী পরে নতুন করে উপদেষ্টা নিয়োগ দেবেন।

রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শপথের সব প্রস্তুতিই ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে। যথাসময়ে মন্ত্রিসভার নতুন সদস্যদের শপথ পড়ানো হবে।”

বঙ্গভবনের একজন কর্মকর্তা জানান, শপথ অনুষ্ঠানের জন্য দরবার হলে এক হাজারের মত অতিথির বসার ব্যবস্থা হয়েছে। সামনের সারির চেয়ারগুলোতে যারা বসবেন তাদের নামের ট্যাগ ইতোমধ্যে লাগিয়ে দেয়া হয়েছে।

পদস্থ কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, কূটনীতিক, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিসহ অতিথিদের দাওয়াতপত্র পাঠানোর কাজ শুরু হয়েছে আগেই। 

দরবার হলে মন্ত্রিসভার নতুন সদস্যদের শপথ মঞ্চ সাজানো হয়েছে ফুল দিয়ে। একসঙ্গে শপথ নেওয়ার সুবিধার জন্য বসানো হয়েছে মাইক স্ট্যান্ড। শপথ অনুষ্ঠান শেষে বঙ্গভবনের মাঠে থাকছে আপ্যায়নের ব্যবস্থা।

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর থেকে ক্ষমতার বাইরে থাকা আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে সপ্তম সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় ফেরে। ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে দ্বিতীয়বার সরকার গঠন করেন হাসিনা।

বিএনপি ও তাদের শরিকদের বর্জনের মধ্যে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচনের ভোট হয়, যাতে ২৩১টি আসনে জয়ী হয়ে আবারো নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় আওয়ামী লীগ।

সেই সরকারের মেয়াদ শেষে গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিবন্ধিত সব দলই অংশ নেয়। ভোটের ফলাফলে ২৯৮ আসনের মধ্যে ২৫৭টিতে জয় পায় আওয়ামী লীগ। জোটগতভাবে তারা পায় ২৮৮ আসন।

৩ জানুয়ারি সকালে জাতীয় সংসদে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথের পর আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে শেখ হাসিনাকে সংসদ নেতা নির্বাচিত করা হয়।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেদিন বিকালে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে দেখা করতে গেলে টানা তৃতীয় মেয়াদে তাকে সরকার গঠনের আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানান রাষ্ট্রপতি।