জাতীয় প্রতীকের নকশাকার ইদ্রিসের জীবনাবসান

বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীকের নকশাকার মোহাম্মদ ইদ্রিস মারা গেছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Dec 2018, 01:42 PM
Updated : 22 Dec 2018, 01:42 PM

কিডনি ও ফুসফুস জটিলতা নিয়ে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার তার মৃত্যু হয়।

মোহাম্মদ ইদ্রিসের মেয়ে আরিফা জানান, তার বাবা আট দিন ধরে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। তার কিডনিতে সমস্যা ছাড়াও ফুসফুসে পানি জমেছিল। এছাড়া হার্ট অ্যাটাকও হয়। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

হাসপাতাল থেকে মোহাম্মদ ইদ্রিসের মরদেহ নেওয়া হয় উত্তর বাসাবোর বাসায়। পরে জোহরের তার মরদেহ গ্রামের বাড়ি রংপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। রংপুরের মুন্সীপাড়ায় তার দাফন হবে বলে স্বজনরা জানিয়েছেন।

১৯৩১ সালে রংপুরের মুন্সীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন মোহাম্মদ ইদ্রিস।

১৯৭২ সালে সরকার ডাক বিভাগের খাম ও ডাকটিকেটের জন্য নকশা আহ্বান করে। মোহাম্মদ ইদ্রিস সেই সময় খামের জন্য নকশা পাঠান। ডাক বিভাগের জুরি বোর্ড তার পাঠানো নকশাটি নির্বাচন করে।

শাপলা ফুলের নকশা ছিল বাংলাদেশ ডাক বিভাগের প্রথম চিঠির খামে, যা আজও দেখা যায়। ডাক টিকিটের নকশায় আবহমান বাংলাকে ফুটিয়ে তোলেন জয়নুল আবেদিন আর্ট কলেজের (বর্তমানের চারুকলা) তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ইদ্রিস।

তৎকালীন পাকিস্তান অবজারভারে কর্মজীবন শুরু হয় তার। তিনি যুক্ত ছিলেন ‘পটুয়া’ কামরুল হাসানের হস্তশিল্পজাত প্রতিষ্ঠান রূপায়নের সঙ্গে।

বঙ্গবন্ধু জাতীয় প্রতীক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মনোগ্রাম করার জন্য কামরুল হাসানকে দায়িত্ব দেন। পরে সে দায়িত্ব বর্তায় মোহাম্মদ ইদ্রিস ও শামসুল আলমের কাঁধে।

ইদ্রিসের তৈরি ভাসমান শাপলা ও শামসুল আলমের করা দুই পাশে ধানের শীষ বেষ্টিত পাটপাতা ও চারটি তারকা। দুজনের এই ডিজাইন মিলে প্রতীকটির চূড়ান্ত ডিজাইন দাঁড় করানো হয়।

১৯৭২ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে এলে তাকে সরকারের তরফ থেকে ময়ূর অঙ্কিত যে জামদানি শাড়ি উপহার দেওয়া হয়, তারও নকশাকার ছিলেন মোহাম্মদ ইদ্রিস। জামদানি শিল্পের বিকাশেও তার অবদান রয়েছে।