জামায়াত নেতাদের ভোট করার বৈধতার প্রশ্নে আদেশ মঙ্গলবার

একাদশ সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর ২৫ নেতার অংশগ্রহণের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে করা রিট আবদনের  উপর আদেশ হবে মঙ্গলবার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Dec 2018, 06:27 PM
Updated : 17 Dec 2018, 06:27 PM

এই আবেদনে বিএনপির ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে ২২ জন ও স্বতন্ত্র তিনজনসহ মোট ২৫ প্রার্থীর প্রার্থিতা স্থগিত চাওয়া হয়েছে।

সোমবার বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাই কোর্ট বেঞ্চ আবেদনটির উপর প্রাথমিক শুনানি হয়।

আদালত বলেছে, মঙ্গলবার ফের শুনানির পর আদেশ দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, সমাজ কল্যাণ সচিব শাহ মোহাম্মদ আলী হুসাইন, ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’র সভাপতি হুমায়ুন কবির ও সংগঠনটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মো. এমদাদুল হক জামায়াত নেতাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে এ আবেদন করেন।

আবেদনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি), নির্বাচন কমিশন সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।

আবেদনে জামায়াত নেতাদের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি) যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা অবৈধ ঘোষণার প্রশ্নে রুল চাওয়া হয়েছে।

শুনানিতে রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী তানিয়া আমীর বলেন, জামায়াতের নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে ২০০৯ সালে রিট আবেদন করা হয়। তার উপর জারিকৃত রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে ২০১৩ সালে হাই কোর্ট জামায়াতের নিবন্ধন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ও অবৈধ ঘোষণা করে।

হাই কোর্টের ওই রায়ে বলা হয়, রাজনৈতিক দল হিসেবে ২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০বি (১)(বি) (২) ও ৯০সি অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও সংবিধানপরিপন্থি। এই রায় এখনও বহাল আছে।

ওই রায়ে ইসির নিবন্ধন হারানো জামায়াত দলীয়ভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না। তাই তাদের নেতারা জোটসঙ্গী দল ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রার্থী হয়েছেন, তিনজন হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। 

তানিয়া আমীর বলেন, “জামায়াতের নেতাদের ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়ে ইসি হাই কোর্টের রায় ও গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের বিভিন্ন বিধির সঙ্গে প্রতারণা, প্রবঞ্চনা করেছে।”

শুনানির পর্যায়ে আদালত বলে, জামায়াত নেতারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি পারবে না, সেটা দেখার দায়িত্ব ইসির। কমিশনের কাজ আদালত করবে না।

সংসদ নির্বাচন দোরগোড়ায় বলে তাড়াহুড়ো করে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে না চাওয়ার কথাও বলে আদালত।

বিচারক বলেন, “আপনারা (রিটকারী) কেন এত দেরিতে আদালতে আসলেন? এ বিষয়ে ইসিতে আবেদনের অনুলিপি দিয়েছেন?”

জবাবে তানিয়া আমীর বলেন, দেওয়া হয়নি।

তখন বিচারক বলেন, “কমিশনে আবেদনের অনুলিপি দিন। তাদের প্রতিনিধিকেও থাকতে বলেন। তাদের বক্তব্য শুনি।”

এরপরই আদালত মঙ্গলবার ফের শুনানি ও আদেশের জন্য রাখে।

বিএনপির প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে জামায়াতের ২২ জন নেতা ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

এরা হলেন, ঢাকা-১৫ আসনে ডা. শফিকুর রহমান, সিরাজগঞ্জ-৪ আসনে রফিকুল ইসলাম খান, খুলনা-৬ আসনে আবুল কালাম আজাদ, কুমিল্লা-১১ আসনে সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, খুলনা-৫ আসনে মিয়া গোলাম পারোয়ার, পাবনা-৩ আনোয়ারুল ইসলাম, পাবনা-৫ আসনে ইকবাল হোসাইন, যশোর-২ আসনে আবু সাঈদ মো. শাহাদাত হোসাইন, ঠাকুরগাঁও-২ আসনে আবদুল হাকিম, দিনাজপুর-১ আসনে আবু হানিফ, দিনাজপুর-৬ আসনে আনোয়ারুল ইসলাম, নীলফামারী-৩ আসনে আজিজুল ইসলাম, গাইবান্ধা-১ আসনে মাজেদুর রহমান, সাতক্ষীরা-২ আসনে মুহাদ্দিস আবদুল খালেক, সাতক্ষীরা-৪ আসনে গাজী নজরুল ইসলাম, পিরোজপুর-১ আসনে শামীম সাঈদী, নীলফামারী-২ আসনে মো. মনিরুজ্জামান, ঝিনাইদহ-৩ মতিয়ার রহমান, বাগেরহাট-৩ আসনে ওয়াদুল শেখ, বাগেরহাট-৪ আসনে আব্দুল আলীম ও চট্টগ্রাম-১৫ আসনে শামসুল ইসলাম।

হামিদুর রহমান আযাদ কক্সাবাজার-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও তিনি বিএনপি-জামায়াত জোটের মনোনীত প্রার্থী।