‘ভুল’ করবেন না: আহ্বান ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতি

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ‘ভুল’ না করার আহ্বান জানিয়েছে ‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Dec 2018, 12:18 PM
Updated : 17 Dec 2018, 12:24 PM

জাতীয় নির্বাচনের আগে গড়ে ওঠা সংগঠনটির আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, এবার ‘ভুল’ করলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ‘নিজের পায়ে নিজের কুড়াল মারা’ হবে।

যুদ্ধাপরাধী, জঙ্গি এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকদের ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছে সম্প্রীতি বাংলাদেশ। দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াতে ইসলামীকে জোটে রাখায় বিএনপির সমালোচনায় মুখর সংগঠনটির নেতারা।

সোমবার ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে সংগঠন আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সংস্কৃতিকর্মী পীযূষ বলেন, “এখানে রাখঢাক করে কথা বলার কেউ নেই। এটা পুতুল খেলার নির্বাচন নয়। এর মধ্যে দিয়ে প্রমাণিত হবে বাংলাদেশ তার সঠিক পথে থাকবে কি না? যারা বাংলা, বাংলা ভাষা, বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধুতে বিশ্বাস করে, তারা কখনও হারতে পারে না।

“স্বাধীনতার পর থেকেই ধর্মীয়, জাতিগত সংখ্যালঘুদের নানাভাবে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা বলতে চাই, গত নির্বাচনে আপনারা কোনো ভুল করেননি, এবারও কোনো ভুল করবেন না। এবার ভুল করা মানে নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারা।”

বাংলাদেশে সাড়ে ১০ কোটি ভোটারদের মধ্যে এক কোটির মতো ধর্মীয় ও জাতিগত বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সদস্য।

ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ভোট পেতে দুই প্রধান রাজনৈতিক শক্তিই নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, তাদের আমলেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিরাপত্তার মধ্যে বসবাস করতে পারে।  অন্যদিকে বিএনপি নেতাদের দাবি, সংখ্যালঘুদের জন্য আওয়ামী লীগ মায়াকান্না করলেও কাজ কিছুই করে না।  

সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বিএনপিকে নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী ইশতেহারে যুদ্ধাপরাধের বিচার চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতিকে ‘তামাশা’ আখ্যায়িত করেন।

আওয়ামী লীগের শাসনকালে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরুর পর থেকেই তার বিরোধিতা করে আসছিল বিএনপি। এই বিচারে বিএনপি ও তাদের জোটসঙ্গী জামায়াতের কয়েকজন শীর্ষনেতার সাজা হয়েছে।

জামায়াতকে নিজেদের জোটে রাখার পাশাপাশি বিএনপি কামাল হোসেন নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিয়ে ভোটের লড়াইয়ে নেমেছে। নিবন্ধনহীন জামায়াতের নেতাদের নিজেদের ধানের শীষ প্রতীকে ভোটও করতে দিয়েছে বিএনপি।

ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী ইশতেহার প্রসঙ্গে পীযূষ বলেন, “ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী ইশতেহার যুদ্ধাপরাধের বিচারের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। এটা হচ্ছে বছরের শ্রেষ্ঠ তামাশা!”

দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে কামাল হোসেনের জামাতা ডেভিড বার্গম্যানের তৎপরতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “কাদের নিয়ে তিনি (কামাল) বিচার করবেন? স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা হানাদার বাহিনীর দোসর ছিল তাদের সন্তানদের নিয়ে?

“আর তার মেয়ের স্বামী ডেভিড বার্গম্যানের কথা কী বলব, যখন ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলছিল, তখন তিনি বিদেশিদের সাথে লবিং করছিলেন তাদের বাঁচানোর জন্য। এসব খুব বেশিদিন আগের কথা নয়।”

সম্প্রীতি বাংলাদেশের সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান একটি প্রবন্ধে উপস্থাপন করেন। তাতে আওয়ামী লীগের শাসনকালে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি ইত্যাদি ক্ষেত্রে অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরা হয়।

সভায় উপস্থিত ছিলেন শহীদজায়া শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক চন্দ্রনাথ পোদ্দার, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আলী শিকদার।