বিজয় দিবসে নানা আয়োজনে মুখর বঙ্গভবন

মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের ৪৭ বছর পূর্তিতে নানা আয়োজন আর নানা শ্রেণি পেশার মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে বঙ্গভবন।

বঙ্গভবন প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Dec 2018, 11:35 AM
Updated : 16 Dec 2018, 12:56 PM

রোববার যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিক, সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা, বিদেশি কূটনীতিক, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ সমাজের নানা পেশার মানুষের পদচারণা ছিলো রাষ্ট্রপ্রধানের বাসভবনে।

বিজয় দিবসে বরাবরের মতো সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, যা পরিণত হয় মিলন মেলায়।

এবারও কয়েক হাজার মানুষের উপস্থিতি ছিলো বঙ্গভবনের সবুজ গালিচায় । তবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে থাকায় রাজনৈতিক অঙ্গনের পরিচিত মুখগুলো দেখা খুব একটা মেলেনি।

বরেণ্য শিল্পীদের দেশাত্মবোধক ও লোকগান, শিশুশিল্পী আর সশস্ত্র বাহিনীর বাদক দলের সংগীতের মূর্চ্ছনা এই আয়োজনের স্বাতন্ত্র এনে দিয়েছিল।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে সবার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।

বিকাল সাড়ে তিনটায় স্ত্রী রাশিদা খানমকে সঙ্গে নিয়ে অনুষ্ঠানস্থল বঙ্গভবনের মাঠে আসেন রাষ্ট্রপতি। এর কিছুক্ষণ আগে অনুষ্ঠানস্থলে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাষ্ট্রপতি ও তার স্ত্রী মঞ্চে আসার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় জাতীয় সঙ্গীত। পরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন রাষ্ট্রপ্রধান।

এরপর বেলুন উড়িয়ে ‘বিজয় উৎসব’ এর সূচনা করা হয়। এবারই প্রথম বিজয় দিবসে বঙ্গভবনে ‘বেলুন উৎসব’ করা হল। বঙ্গভবনের মাঠ ও ছাদ থেকে কয়েকশ বেলুন ওড়ানো হয়।

পরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, বীরশ্রেষ্ঠদের পরিবারের সদস্যসহ আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নেন এবং তাদের সার্বিক সহায়তার আশ্বাস দেন। তারা ভারত, শ্রীলংকার, নেপাল ও মালদ্বীপের ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের সদস্যদের সঙ্গেও কুশল বিনিময় করেন।

অনুষ্ঠান মাঠের ভিভিআইপি এনক্লোজারে বিজয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী কেক কাটেন।

পরে তারা মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, বিদেশি অতিথি, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, সংসদ সদস্য, তিন বাহিনীর প্রধানসহ সমারিক-বেসামরিক কর্মকর্তা, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

বঙ্গভবনের এই অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করে বাংলাদেশ টেলিভিশন।

বঙ্গভবনের এই অনুষ্ঠানে ছিলেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জোটশরিক যুক্তফ্রন্টের নেতা একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীও অংশ নেন এই অনুষ্ঠানে। ছিলেন বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী জাফরুল্লাহ চৌধুরীও।

ডিপ্লোম্যাটিক কোরের ডিন ভ্যাটিকানের রাষ্ট্রদূত জর্জ কোচেরি, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার, ভারতীয় হাই কমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা, যুক্তরাজ্যের হাই কমিশনার অ্যালিসন ব্লেইক, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পোসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

অনুষ্ঠানে শিল্পী রফিকুল আলম, ফাহমিদা নবী, বাপ্পা মজুমদার, মেহরীন, মুনিরা বাউল গান গেয়ে শোনান। এছাড়া শিশু একাডেমির শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করে।