পরোয়ানার আসামিরাই গ্রেপ্তার হচ্ছে: ইসি সচিব

বিএনপি নেতাকর্মীদের হয়রানিমূলক গ্রেপ্তারের অভিযোগ নাকচ করে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেছেন, প্রতিটি অভিযোগই গুরুত্ব নিয়ে দেখছেন তারা, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেগুলোর সত্যতা মিলছে না।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Dec 2018, 05:22 PM
Updated : 14 Dec 2018, 05:28 PM

নাশকতাসহ বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে পলাতক থাকা বিএনপি নেতাকর্মীরা নির্বাচনের সময়ে মাঠে আসায় গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

অহেতুক কাউকে হয়রানি ও বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তার না করার জন্য কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছেও বলে জানান নির্বাচন কমিশন সচিব।

শুক্রবার বিকালে নির্বাচন কমিশনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “প্রতিটি অভিযোগই আমরা গুরত্ব সহকারে দেখছি, আমলে নিচ্ছি। এ বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারদের কাছে পাঠাচ্ছি। ইলেকটোরাল ইনকোয়ারি কমিটির কাছেও পাঠাচ্ছি। তারা এ সব বিষয় তদন্ত করে দেখছেন।”

সচিব জানান, বেশ কয়েকটি তদন্ত রিপোর্ট কমিশনের হাতে এসেছে। তাতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, অভিযোগগুলোর সত্যতা নেই। আর যে অভিযোগগুলোর সত্যতা পাওয়া গেছে সেগুলো নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

বিএনপির অভিযোগের সঙ্গে বাস্তবতার মিল পাওয়া যাচ্ছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, “কমিশন ওই ভাবে সিদ্ধান্ত দিয়েছে যে, যদি কোনো পেন্ডিং ওয়ারেন্ট থাকে এবং তা তামিলে আদালতের কোনো তাগিদ থাকে তাহলে তাদের গ্রেপ্তার করা যাবে।

“আসলে ওয়ারেন্টভুক্তরা অনেকেই আত্মগোপনে ছিলেন। এখন ভোটের মাঠে তারা দৃশ্যমান হয়েছেন। এ কারণে হয়ত পুলিশ তাদের ধরছে বা ধরার চেষ্টা করছে, আদালেতের নির্দেশনা তামিল করা হচ্ছে।”

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান কামাল হোসেনের ওপর হামলার বিষয়ে কমিশন অবগত নয় বলেও জানান তিনি।

ইসি সচিব বলেন, “এ বিষয়টি অবহিত হয়নি ইসি।এ নিয়ে কমিশনে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি।”

দেশের অনেক এলাকায় সংঘটিত সহিংসতার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “৩০০ আসনে এতো প্রার্থীর মধ্যে দুয়েক জায়গায় শতকরা ১-২% ঘটনা ঘটছে; তা অস্বীকার করছি না। তবে অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।”

সাংবাদিকদের জন্য গাইডলাইন তৈরির চিন্তা

সচিব জানান, নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত পর্যবেক্ষকদের জন্য (স্থানীয় ও বিদেশি) আলাদা আলাদা নীতিমালা রয়েছে। তবে সাংবাদিকদের জন্য এ ধরনের কোনো নীতিমালা ইসির নেই।

“বৃহস্পতিবার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে সভা থেকে সাংবাদিকদের জন্যও একটা নীতিমালা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। কমিশনাররা বলছেন, আলোচনা করে একটা গাইডলাইন তৈরি করব। তবে সাংবাদিকরা ভোট কেন্দ্রে যেতে পারবেন, ছবি তুলতে পারবেন, এমনকি ভোটারদের মতামতও নিতে পারবেন। এসব ব্যাপরে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই,” বলেন তিনি।

সচিব বলেন, ভোট কেন্দ্রের ভেতর থেকে সরাসরি সম্প্রচারের ক্ষেত্রে কিছুটা বাধ্যবাধকতা রাখার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশন নির্দেশনা দিয়েছে যে, ভোট কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসারদের কাছে ফোন থাকবে এবং পুলিশ ইনচার্জ ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। অন্যদের কাছে ফোন থাকতে পারে, তবে তারা ভোট কক্ষে তা ব্যবহার করতে পারবেন না। কেন্দ্রের ভেতরে ব্যবহার না করে বাইরে ব্যবহার করতে পারবেন।

“ভেতরে ব্যবহার করলে বিশৃঙ্খলা হতে পারে। যারা ভোট দিতে কেন্দ্রে আসবেন তারাও মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে উৎসাহী হতে পারে। এ ব্যাপারে একটা বিধি-নিষেধ থাকা প্রয়োজন।”