অভিযোগ নিয়ে পুলিশ প্রধানের দ্বারে বিএনপি

নির্বাচন কমিশনে কয়েক দফায় অভিযোগ করেও ফল না পেয়ে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার-হয়রানি বন্ধের দাবি নিয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীর কাছে গেলেন বিএনপি নেতারা।

অপরাধ বিষয়ক প্রধান প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Dec 2018, 12:49 PM
Updated : 12 Dec 2018, 12:53 PM

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিএনপি প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলার পরদিন বুধবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে গিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার সঙ্গে দেখা করেন সেলিমা রহমানের নেতৃত্বে বিএনপির কয়েকজন নেতা।

সেখানে বৈঠক শেষে বিএনপির প্রতিনিধি দল বিকালে পুলিশ সদরদপ্তরে গিয়ে জাবেদ পাটোয়ারীর সঙ্গে বসেন।

প্রায় আধা ঘণ্টার বৈঠকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার হয়রানি বন্ধের দাবি জানান তারা।

বৈঠক শেষে সেলিমা রহমান সাংবাদিকদের বলেন, “নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ গ্রেপ্তার করছে, হয়রানি করছে। সেজন্য নির্বাচনের প্রচার কাজ চালানো যাচ্ছে না।

আমরা যেন নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে না পারি, যেন নির্বাচনে কোনো এজেন্ট রাখতে না পারি, আমাদের নেতাকর্মীরা যেন নির্বাচনের মাঠে থাকতে না পারে সেজন্য ইচ্ছা করে নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হচ্ছে।”

গত ১০ বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগে হাজার হাজার মামলা রয়েছে। নির্বাচন উপলক্ষে এসব মামলায় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার না করার দাবি প্রথম থেকেই জানিয়ে আসছিল বিএনপি।

আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী, ফাইল ছবি

তবে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, আগের নাশকতার মামলা নিয়ে তাদের কিছু করার নেই, আইন অনুযায়ী পুলিশ এসব বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে। তবে নতুন করে যাতে হয়রানিমূলক কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তা তারা দেখবেন।

এখন বিএনপি নেতাকর্মীদের নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে গ্রেপ্তার-হয়রানি করা হচ্ছে বলে সকালে সিইসির কাছে অভিযোগ করেন সেলিমা রহমানসহ বিএনপি নেতারা।

মঙ্গলবার নির্বাচনী সহিংসতায় নোয়াখালী ও ফরিদপুরে দুই আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু এবং ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায়  দুঃখপ্রকাশ করেন সিইসি নূরুল হুদা।

বিএনপি উদ্বেগ নিরসনে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস না দিলেও তাদের অভিযোগ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানান তিনি।

পুলিশ প্রধানের সঙ্গে দেখা করার পর সেলিমা রহমান বলেন, তাদের অভিযোগগুলো পুলিশের মহাপরিদর্শকের কাছে তুলে ধরেছেন।

সকালে সিইসির কাছে গিয়েছিলাম, উনি বলেছেন তিনি বিব্রত। প্রশাসনসহ সব কিছু সিইসির আওতায় থাকবে। কিন্তু কার্যত দেখা যাচ্ছে, তিনি কিছু করতে পারছেন না। এজন্য বলতে এসেছি, আমাদের সামনে মাত্র আর ১৮টা দিন আছে। এই ১৮ দিন যেন নির্বাচনী প্রচারণা শান্তিমতো করতে পারি।

আমাদের নেতাকর্মীদের মাঠে থাকতে দেওয়া হোক। আমরা যেন এজেন্ট দিয়ে একটা সুন্দর, ফেয়ার নির্বাচন করতে পারি- এটাই ছিল আমাদের বক্তব্য।”

‘কিছু কিছু ঘটনা ঘটেছে, তা আইজিপি স্বীকার করেছেন’ জানিয়ে সেলিমা রহমান বলেন, “বিএনপির দাবিগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, তিনিও এ রকম দুয়েকটা ঘটনা শুনেছেন। তিনি কথা দিয়েছেন যেন সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনী কার্যক্রম চালাতে পারি, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন।

বিএনপির প্রতিনিধি দলে সেলিমা রহমান ছাড়াও মেজর কামরুল ইসলামসাবেক আইজি আব্দুল কাইয়ুম ছিলেন।