‘বোঝার উপর শাকের আঁটি’: নতুন দপ্তর নিয়ে মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী

নির্বাচনের মওসুমে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বাড়তি হিসেবে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালনকে ‘দুরূহ’ মনে করছেন মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, যিনি নৌকা প্রতীকে নির্বাচনের মাঠেও রয়েছেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Dec 2018, 01:37 PM
Updated : 11 Dec 2018, 01:37 PM

মঙ্গলবার চারজন টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার পর রুলস অব বিজনেসের ক্ষমতাবলে বর্তমান দায়িত্বের অতিরিক্ত হিসেবে মন্ত্রীদের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দপ্তরগুলো নতুন করে বণ্টন করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নতুন দায়িত্ব পাওয়ার বিকালে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সরকারি পরিবহন পুল ভবন লাগোয়া সচিবালয়ের আট নম্বর ভবনে এসে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরিচিত হন মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রায় আড়াই সপ্তাহ আগে দায়িত্বে নতুন দপ্তর যোগ হওয়ার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “একে তো নির্বাচন, সেখানে আমি প্রার্থী। সেই কারণে আমি যে মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করে আসছি সেটাই এই মাসে পালন করা একটু দুরূহ। তাই এটি বোঝার উপর শাকের আঁটির মতো।”

তবে এখন দাপ্তরিক কাজে নতুন কিছু করার নেই জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “এটা রুটিন ওয়ার্ক চালিয়ে যাওয়ার জন্য, এখানে পলিসিগত কিছু নেই, রুটিন ওয়ার্কটা চালিয়ে যেতে হবে। গ্রাম দেশে একটা কথা আছে, যে ভাত রান্ধে সে চুলও বান্ধে, এই রকম আরকি। এটা খুব অল্প সময়ের জন্য। জটিল কিছু করারও নেই, বলারও নেই।”

গাজীপুর-১ আসন থেকে পর পর দুইবার সাংসদ নির্বাচিত মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল এবারও সেখানে নৌকার প্রার্থী।

২০০৮ সালে পৌর মেয়রের পদ থেকে পদত্যাগ করে গাজীপুর-১ আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি। এরপর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের তোড়জোড়ের মধ্যে তখন ছোট আকারের সরকার গঠনের একটি আলোচনা উঠলেও পরে তা হয়নি।

অবশ্য একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের মন্ত্রিসভার শেষ বৈঠকটি গত ৩ ডিসেম্বর হয়ে গেছে। সরকারের মন্ত্রীরা এখন কেবল রুটিন দায়িত্ব পালন করছেন।

চলতি বছর জানুয়ারিতে মন্ত্রিসভায় সর্বশেষ রদবদলের পর এতদিন ৩০ জন মন্ত্রী, ১৭ জন প্রতিমন্ত্রী এবং দুইজন উপমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকারে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

তাদের মধ্যে ধর্মমন্ত্রী মতিউর রহমান, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য না হয়েও টেকনোক্র্যাট হিসেবে মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে গত ৬ নভেম্বর মন্ত্রিসভা থেকে টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীদের পদত্যাগ করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। ওই দিন সন্ধ্যায় চারমন্ত্রী মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পদত্যাগপত্র জমা দেন।

পদত্যাগপত্র গ্রহণ না করা পর্যন্ত এই চারজন মন্ত্রীকে দায়িত্ব চালিয়ে যেতে গত ৭ নভেম্বর নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর থেকে তারা দাপ্তরিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন। গত ৯ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতি চারজনের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করার পর তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় নিজের হাতে রেখে  প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের হাতে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ধর্ম মন্ত্রণালয় দেখভালের দায়িত্ব পেয়েছেন মোজাম্মেল হোসেন।

আরও খবর