শনিবার বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির (বিএমএ) ৭৬তম দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের অফিসার ক্যাডেটদের কমিশনপ্রাপ্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত রাষ্ট্রপতির কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
ভাটিয়ারিতে বিএমএর প্যারেড গ্রাউন্ডে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ কুচকাওয়াজ পরিদর্শন এবং অভিবাদন গ্রহণ করেন।
বিএমএতে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মত তিনবছর মেয়াদী প্রশিক্ষণ কোর্সেরর পর ক্যাডেটদের কমিশন দেওয়া হল।
কমিশনপ্রাপ্ত ক্যাডেটদের উদ্দেশ্যে আবদুল হামিদ বলেন, “আজকের দিনটা তোমাদের জীবনে অত্যন্ত আনন্দের এবং একইসাথে গুরুত্বপূর্ণ। আজকের এই শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে তোমাদের উপর ন্যস্ত হল দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পবিত্র দায়িত্ব।
রাষ্ট্রপতি বলেন, “তোমরা এদেশের সন্তান, জনগণের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই তোমাদের সকলকেই সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখ ও হাসি-কান্নার সমান অংশীদার হতে হবে। যে কোনো দুর্যোগ ও দুঃসময়ে বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।”
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ‘জাতির গর্বের প্রতীক’ উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, “দেশে-বিদেশে দায়িত্ব পালনে দক্ষতা ও পেশাদারিত্ব দেখিয়ে ইতিমধ্যে আমাদের সেনাবাহিনী সব মহলের প্রশংসা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
“মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন, সুশৃঙ্খলভাবে ত্রাণ বিতরণ এবং তাদের পরিচয়পত্র তৈরিতে সেনাবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।”
প্রশিক্ষণে কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল ও সাফল্যের জন্য পদকপ্রাপ্ত ক্যাডেটদের অভিনন্দন জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, “তোমাদের আরো অনেক দূর যেতে হবে, অতিক্রম করতে হবে অনেক চ্যালেঞ্জ। সে চ্যালেঞ্জে তোমরা জয়ী হবে।”
রাষ্ট্রপতি তার ভাষণে ‘শক্তিশালী ও প্রশিক্ষিত’ সেনাবাহিনী গঠনে জাতির পিতার স্বপ্ন, ১৯৭৪ সালে প্রতিরক্ষা নীতি প্রণয়ন এবং বিশ্বমানের মিলিটারি একাডেমি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে কুমিল্লা সেনানিবাসে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির যাত্রা শুরুর স্মৃতিচারণ করেন।
এই কুচকাওয়াজের মাধ্যমে মোট ২৫৪ জন বাংলাদেশি, দুই জন সৌদি আরবের এবং একজন শ্রীলংকান ক্যাডেটসহ মোট ২৫৭ জন কমিশন লাভ করেন। কমিশনপ্রাপ্ত ক্যাডেটদের মধ্যে ২১৭ জন পুরুষ এবং ৩৭ জন নারী।
পরে ক্যাডেটরা আনুষ্ঠানিক শপথগ্রহণ করেন এবং অভিভাবকরা নবীন অফিসারদের র্যাংক ব্যাজ পরিয়ে দেন।
এর আগে রাষ্ট্রপতি বিএমএ প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছালে সেনাবাহিনী প্রধান জেনালের আজিজ আহমেদ তাকে অভ্যর্থনা জানান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ ও বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত, আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ডের জিওসি লেফট্যানেন্ট জেনারেল মো. নাজিম উদ্দিন, বিএমএর কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল আনোয়ারুল মোমেন, ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও চট্টগ্রাম এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান।