রোহিঙ্গা শিবির ঘুরলেন নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার কক্সবাজারে তিন দিনের সফরে গিয়ে রোহিঙ্গা শরনার্থী শিবির পরিদর্শন ও স্থানীয় জনগণের সঙ্গে কথা বলেছেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Dec 2018, 02:54 PM
Updated : 6 Dec 2018, 03:14 PM

রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বে নিয়ে বাংলাদেশে এসেই মিলারের এই সফর রোহিঙ্গাদের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বের বহিঃপ্রকাশ বলে বৃহস্পতিবার দূতাবাসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশকে এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অংশীদার উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলার বলেন, অভিন্ন স্বার্থের ওপর ভিত্তি করেই যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশের অংশীদারিত্ব পরিচালিত হচ্ছে।  

কক্সবাজারে প্রথম এই সফরে কোনারপাড়ায় গিয়ে ‘নো ম্যানস ল্যান্ডে’ আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন রবার্ট মিলার।

উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার রোহিঙ্গা শিবিরের স্বাস্থ্য ক্লিনিক, খাদ্য বিতরণ কেন্দ্র, পাচার রোধ ও দুর্যোগ আশ্রয় কেন্দ্র এবং শিক্ষাকেন্দ্র ঘুরে দেখার পাশাপাশি সেখানে চলমান ত্রাণ তৎপরতার ব্যাপকতা সম্পর্কেও ধারণা নেন তিনি।

শরণার্থীদের কাছ থেকে তাদের মর্মস্পর্শী কাহিনীও শোনেন রাষ্ট্রদূত।

জাতিসংঘ এবং সরকারি কর্মকর্তা ও এনজিও প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেন রাষ্ট্রদূত মিলার। সেখানে শরণার্থীদের সমস্যা মোকাবেলার চলতি বিষয়গুলোর পাশাপাশি ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জগুলোও উঠে আসে।

কক্সবাজারে অনুষ্ঠেয় সব বৈঠকেই সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের জনগণ যে  ‘অভূতপূর্ব উদারতা’ দেখিয়েছে তাতে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা ও প্রশংসা জানান রবার্ট মিলার।

পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পাঁচজন জেনারেল এবং সেনাবাহিনীর দুটি ইউনিটের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কথাও তুলে ধরেন মিলার।

শরণার্থী সংকটের মূল কারণগুলোর সমাধান করা মিয়ানমারের দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেন তিনি।  

“এর মধ্যে রয়েছে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ, দেশের ভেতরে চলাফেরার স্বাধীনতা ও জীবিকা অর্জনের সুযোগসহ আনান কমিশনের প্রধান সুপারিশগুলো,” বলেন রবার্ট মিলার।

নির্ভরযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতে শরণার্থীদের স্বভূমে পুরোপুরি স্বেচ্ছামূলক, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে বাংলাদেশের অব্যাহত প্রতিশ্রুতিকে স্বাগত জানিয়ে মিলার বলেন, গত বছর অগাস্টে এই সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গা শরণার্থী ও বাংলাদেশের স্থানীয় জনপদগুলোর সহায়তায় প্রায় ৩৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

এছাড়া উন্নয়ন সহায়তা হিসেবে  ২০ কোটি ডলারের বেশি অনুদান দিয়েছে দেশটি।

মিলার বাংলাদেশে নিয়োগ পাওয়ার আগে ২০১৪ সাল থেকে আফ্রিকার দেশ বতসোয়ানায় যুক্তরাষ্ট্র মিশনের দায়িত্বে ছিলেন। ঢাকায় তিনি রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের স্থলাভিষিক্ত হয়ে গত ২৯ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নিজের পরিচয়পত্র পেশ করেন।