ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস, ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রভাতি শাখার প্রধান জিনাত আখতার এবং অরিত্রীর শ্রেণি শিক্ষক হাসনা হেনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইতোমধ্যে র্যাব-পুলিশকে বলেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
তিনজনের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাতে পল্টন থানায় মামলা করেন অরিত্রীর বাবা দিলীপ অধিকারী। ওই মামলাটি তদন্তের জন্য গোয়েন্দা পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
বুধবার সন্ধার পর মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন বলে জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) আব্দুল বাতেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। খুব শিগগিরই তাদের গ্রেপ্তার করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।”
মামলা হওয়ার পর বুধবার দিনভর স্কুলে দেখা যায়নি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীনসহ অন্য তিন শিক্ষককে; শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ চললেও আগের দিন স্কুলে ছিলেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ।
মামলা দায়েরের পর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন মঙ্গলবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “শুনেছি আমাকেসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।”
নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রী গত সোমবার আত্মহত্যা করার পর থেকে উত্তেজনা চলছে রাজধানীর নামি এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা নানা অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ করছেন।
গত রোববার বার্ষিক পরীক্ষা চলার সময় মোবাইল ফোনে নকল করার সময় অরিত্রী ধরা পড়েন বলে স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি। ওই ঘটনার পরদিন তার বাবা-মাকে ডেকে নেওয়া হয়।
তখন অরিত্রীর সামনে তার বাবা-মাকে অপমান করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এরপরই ঘরে ফিরে আত্মহত্যা করেন এই কিশোরী।
মঙ্গলবার শিক্ষার্থীরা ফুঁসে উঠলে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ নিজে যান ভিকারুননিসায়; দুটি তদন্ত কমিটি করা হয়। একটির প্রতিবেদনে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে শিক্ষামন্ত্রী বুধবার জানান।
এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয় ওই তিন শিক্ষকের এমপিও বাতিল করে; মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বুধবার তাদের বরখাস্ত করে ভিকারুননিসার পরিচালনা পর্ষদ।
তার আগে মঙ্গলবার রাতে পল্টন থানায় মামলা করেন দিলীপ। তাতে তিনি নকলের অভিযোগ অস্বীকার করেন, তবে স্বীকার করেন যে তা মেয়ে মোবাইল নিয়ে স্কুলে গিয়েছিল।
এজাহারে বলা হয়, অরিত্রী অধ্যক্ষের পা ধরে মাফ চাইলেও তাকে ক্ষমা করা হয়নি, তার বাবা-মা করজোড়ে ক্ষমা চাইলেও তাদের কথাও শোনা হয়নি।
দিলীপ মামলায় বলেছেন, শিক্ষকদের ‘নির্মম আচরণে’ মর্মাহত হয়ে অরিত্রী আত্মহত্যায় বাধ্য হয়। একই সাথে শিক্ষকদের ‘নির্দয় ব্যবহার ও অশিক্ষকসুলভ’ আচরণ অরিত্রীকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করেছে।