সিইসির দপ্তরে গিয়ে প্রশ্নবাণে ভাগ্নে শাহজাদা

ভোটের লড়াইয়ে প্রথম নেমেই প্রধান নির্বাচন কমিশনারের ভাগ্নে হিসেবে আলোচনায় উঠে আসেন ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী এস এম শাহজাদা, এর মধ্যেই নির্বাচন ভবনে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নবাণে পড়লেন তিনি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Dec 2018, 03:09 PM
Updated : 3 Dec 2018, 03:59 PM

একাদশ সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক স্থানীয় নেতা শাহজাদা।

৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় এই নির্বাচনের প্রার্থী হতে ইচ্ছুকদের মনোনয়নপত্র বাছাই হয়েছিল রোববার, তাতে বিএনপির দুজন প্রার্থী বাদ পড়লেও উৎরে গেছেন শাহজাদা।

তার এক দিন পর সোমবার সন্ধ্যায়ই ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে দেখা যায় তাকে।

মামা সিইসি কে এম নূরুল হুদার সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে আসার সময় সাংবাদিকরা ছেঁকে ধরেন তাকে, করতে থাকেন একের পর এক প্রশ্ন।

শাহজাদা বলেন, ‘একেবারে ব্যক্তিগত’ কাজেই তিনি তার মামার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন।

“প্রধান নির্বাচন কমিশনার মহোদয়ের মা অসুস্থ, তার ওষুধ কেনার জন্য প্রেসক্রিপশন নিয়ে এসেছি আমি। কারণ স্থানীয় এলাকায় এই ওষুধ পাওয়া যায় না। প্রেসক্রিপশন দিয়েই চলে এসেছি। আর কোনো কাজ ছিল না।”

বাছাইয়ে বাদ পড়া প্রার্থীদের আপিলের আবেদন চলার মধ্যেই প্রার্থী শাহজাদা নির্বাচন ভবনে এলেন। তার আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী গোলাম মওলা রনিও এদিন আপিল আবেদন করে যান।

প্রেসক্রিপশন নিয়ে ইসিতেই কেন এলেন- প্রশ্ন করা হলে শাহজাদা বলেন, “আমি আজই (সোমবার) ঢাকায় এসেছি; সেখান থেকে প্রেসক্রিপশন নিয়ে এসেছি, সেটা কীভাবে দিব এখানে না আসলে?”

এর আগেও সিইসির দপ্তরে যোগাযোগের বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন শাহজাদাকে। 

তিনি বলেন, “সেটা তো অনেক আগে, সেটা তো এখন না; সেটা তফসিলের আগে।”

মামা হিসেবে সিইসির কাছে কোনো সহযোগিতা চেয়েছেন কি না- এ প্রশ্নের জবাবে ক্ষমতাসীন দলের এই প্রার্থী বলেন, “প্রশ্নই ওঠে না। এটা তার যেভাবে আছে, সেই নিয়মেই চলবে। এতে আমার সহোযোগিতা চাওয়ার কি আছে?”

প্রার্থী হওয়ায় বিষয়ে মামার সম্মতি ছিল কি না- জানতে চাইলে শাহজাদা বলেন, “এ বিষয়ে তার সঙ্গে কোনো কথা হয়নি। নির্বাচন আমার ব্যক্তিগত ব্যপার। আমি কোথায় কী করছি, এটা তো (তার) খোঁজ রাখার ব্যাপার না। আমি তো উনার পরিবারের অংশ না। আমি আত্মীয়, কিন্তু পরিবারের অংশ না।”

স্বজন হিসেবে প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে নূরুল হুদার বাধা ছিল কি না- এ প্রশ্নের জবাবে শাহজাদা বলেন, “এখানে কোনো প্রশ্নই আসে না।...এটা  গনতান্ত্রিক অধিকার একজন নাগরিকের নির্বাচন করা। আমি তাই করেছি। আমি নিজে স্বাবলম্বী, তাই যেভাবে চলার সেভাবে চলি।”

জয়ের বিষয়ে কতখানি আশাবাদী- জানতে চাইলে নৌকার এই প্রার্থী বলেন, “আমি যা আশা করেছিলাম, তার থেকে অনেক সুন্দর। আমি শতভাগ আশবাদী জয়ের ব্যাপারে।

“আমার এলাকায় যেতে যে পথটা ২০ মিনিট লাগে, এখন সে পথটা যেতে সাড়ে তিন ঘণ্টা লাগছে। আমি হেঁটে গেছি, মানুষ রাস্তার দুইপাশে দাঁড়িয়ে ছিল। পরিবর্তন মানুষের মনের ভেতরে আছে, তারা পরিবর্তন চায়। সেটা আমি সিইসির ভাগ্নে বলে না। মানুষের চাওয়া, নির্বাচন যেন সুষ্ঠু হয়।”

নির্বাচিত হলে এলাকার উন্নয়নে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন শাহজাদা।

পটুয়াখালী-৩ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইনকে বাদ দিয়ে শাহজাদাকে প্রার্থী করছে আওয়ামী লীগ।

আসনটিতে ২০০৮ সালের সংসদ সদস্য গোলাম মওলা রনি মনোনয়ন না পাওয়ার পর আওয়ামী লীগ ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দিয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন, তবে বাছাইয়ে তা বাদ পড়ে।