নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চান বিচারপতি মানিক

নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের বিরুদ্ধে ‘পক্ষপাতের’ অভিযোগ তুলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রাষ্ট্রপতির কাছে দাবি জানিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Nov 2018, 01:27 PM
Updated : 25 Nov 2018, 01:37 PM

রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “মাহবুব তালুকদার একটি প্রবন্ধ লিখেছেন, আমি মনে করি যে, সেই প্রবন্ধ লিখে মাহবুব তালুকদার তার নিরপেক্ষতা হারিয়েছেন। উনি যে একজন দলীয় লোক, উনি যে পক্ষপাতে দুষ্ট তা প্রমাণ করেছেন।”

বতর্মান নির্বাচন কমিশনের অধীনে অনুষ্ঠিত কয়েকটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে মাহবুব তালুকদার যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ বলে অভিযোগ করেন তিনি।

রাষ্ট্রপতিকে তার ক্ষমতা প্রয়োগ করে বিষয়টি সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলে পাঠানোর দাবি জানিয়ে শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, “আমার দাবি মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে, আপনি আজই সুপ্রিম জুডিসিয়ারি কাউন্সিলে ব্যাপারটা রেফার করুন। কারণ আমি একজন আইনজ্ঞ হিসেবে মনে করি, যে কমিশনে মাহবুব তালুকদার সাহেব থাকবেন সেই কমিশনের দ্বারা নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না। কথা আছে, এক বালতি দুধে এক ফোঁটা চনা নষ্ট করার জন্য যথেষ্ট।”

নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার

গত বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের সাথে পুলিশ কর্মকর্তাদের বৈঠকে লিখিত বক্তব্য দেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। সেই লিখিত বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে।

‘তারেক রহমানের ইন্টারভিও; নৈতিক ও আইনি অবস্থান’ শীর্ষক এই আলোচনা অনুষ্ঠানে ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলার ‘হোতা’ হিসেবে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন বিচারপতি মানিক।

তিনি বলেন, “অথচ নির্বাচন কমিশন সেই ছেলেকে কথা বলতে অ্যালাউ করছে, এর চেয়ে লজ্জাকর কোনো ঘটনা আর হতে পারে না। মাননীয় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে আহ্বান, দয়া করে আপনার যে ক্ষমতা আছে দেখুন, এই ধরনের অনৈতিক সুযোগ ও বেআইনি কার্যকলাপ বন্ধ করুন। নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে।”

একাত্তরের পরাজিত ‘অপশক্তি শুধু জামায়াতই নয়, বিএনপিও’ মন্তব্য করে শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, তাদের বড় নেতা এখন ড. কামাল হোসেন।

“জামায়াত-বিএনপির মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী চরিত্রের মধ্যে কোনো পার্থক্য দেখি না। সেই অপশক্তির সবচেয়ে বড় অভিনেতা ড. কামাল হোসেন। তারা যদি নির্বাচিত হয় তাহলে কাদের সিদ্দিকীর কথা অনুযায়ী প্রথম তিন রাতেই পাঁচ লক্ষ লোককে খুন করে ফেলবে। এই রুমে যারা আছেন কেউ বেঁচে থাকবেন না।”

কামাল হোসেন এখন ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম ও ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদকে দলে ভেড়ানোর চেষ্টা করছেন বলে জানান বিচারপতি মানিক।

“একটা জিনিস দেখে খুশি হয়েছি যে, কামাল সাহেব, ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম ও ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদকে খুব চেষ্টা করছে তার দলে টানতে। কিন্তু আমি মনে করি, তারা আসবেন না। কারণ কোনো সুস্থ বিবেক সম্পন্ন মানুষ কামাল সাহেবের এই ফাঁদে পা দিবে না।”

কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে একাত্তরে ‘রহস্যজনক’ ভূমিকার রাখার অভিযোগ করেন বিচারপতি মানিক। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড নিয়ে বেশ কয়েকজন লেখক-সাংবাদিকদের লেখা উদ্বৃত করে তিনি বলেন, “তার (কামাল হোসেন) যে ভূমিকা ছিল এখন সেটা স্পষ্ট হয়ে গেছে। কারণ, উনি সেই দলের সাথে কাজ করছেন যে দলের নেতা জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যার মূল নকশা করেছিলেন।”

বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম নামে একটি সংগঠনের আয়োজনে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি মুহাম্মদ শফিকুর রহমান, সম্প্রীতি বাংলাদেশের সদস্য সচিব ডা. মামুন আল মাহতাব, নর্দার্ন ইউনিভার্সিটির উপদেষ্টা শেখ মঞ্জুর মোর্শেদ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইয়াদিয়া জামানসহ আরও অনেকে বক্তব্য দেন।