৩ মাস পর মুক্তি পেলেন শহিদুল

জামিনের কাগজের ঠিকানা জটিলতার অবসানের পর কারামুক্ত হলেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Nov 2018, 02:28 PM
Updated : 20 Nov 2018, 03:43 PM

মঙ্গলবার রাতে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ছাড়া পান তিনি। তিন মাস আগে গ্রেপ্তারের পর এই কারাগারেই ছিলেন তিনি।  

হাই কোর্ট থেকে জামিন পাওয়ার পর শহিদুলের স্বজন ও বন্ধুরা মঙ্গলবার সকাল থেকে কেরানীগঞ্জের কারাগারের সামনে প্রতীক্ষায় ছিলেন; কিন্তু তার মুক্তি মিলছিল না।

ঢাকার জেলার মাহবুবুল আলম সন্ধ্যায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “যে জামিনের কাগজ আমাদের কাছে এসেছিল, তার ঠিকানার সাথে জেলখানায় থাকা ঠিকানার কোনো মিল নেই। এজন্য আমরা সংশ্লিষ্ট আদালতে তা সংশোধনের জন্য পাঠিয়ে দিয়েছি। সংশোধন হয়ে আসলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সংশোধিত নথি আসার পর তা যাচাই করে রাত সাড়ে ৮টার দিকে শহিদুলকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জেলার জানান।

নিরাপদ সড়কের আন্দোলনের সময় উসকানিমূলক বক্তব্য প্রচারের অভিযোগে তথ্য-প্রযুক্তি আইনের মামলায় গ্রেপ্তার শহিদুলকে গত ১৫ নভেম্বর জামিন দেয় হাই কোর্ট।

তার জামিন প্রশ্নে এক মাস আগে অন্য একটি বেঞ্চের দেওয়া রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি শেখ আবদুল আউয়াল ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে গত ৩ ও ৪ অগাস্ট জিগাতলা এলাকায় সংঘর্ষের বিষয়ে কথা বলতে বেশ কয়েকবার ফেইসবুক লাইভে এসেছিলেন শহিদুল। ওই আন্দোলনের বিষয়ে আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি সরকারের সমালোচনাও করেন।

এরপর ৫ অগাস্ট শহিদুল আলমকে তার বাসা নিয়ে যায় গোয়েন্দা পুলিশ। পরদিন ‘উসকানিমূলক মিথ্যা’ প্রচারের অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলা করে তাকে আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে পাঠায়।

১১ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ইমরুল কায়েস শহিদুল আলমের জামিন আবেদন নাকচ করেন। এরপর ১৬ সেপ্টেম্বর তিনি হাই কোর্টে জামিন আবেদন করলে ৩ অক্টোবর শুনানি শুরু হয়।

শুনানি শেষে গত ৭ অক্টোবর হাই কোর্ট শহিদুল আলমের জামিন প্রশ্নে রুল জারি করে। কেন জামিন দেওয়া হবে না- তা জানতে চাওয়া হয় রুলে। এক সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্রকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

সেই রুলের ওপর বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের হাই কোর্ট বেঞ্চে শুনানি শুরু হলেও গত ১ নভেম্বর মামলাটি ওই বেঞ্চের কার্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়।

এরপর সহিদুল আলমের আইনজীবীরা বিচারপতি শেখ আবদুল আউয়ালও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর হাই কোর্ট বেঞ্চে গিয়ে নিজেদের পক্ষে আদেশ পান।

শহিদুলের মুক্তির জন্য নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেনসহ বিশ্বের নানা অঙ্গনের নেতৃস্থানীয় অনেকে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।