তাকে হাসপাতাল থেকে কারাগারে নেওয়ার ঘটনায় আদালত ‘বেআইনি কিছু খুঁজে পায়নি’ বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের একজন আইনজীবী।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে খালেদাকে কারাগারে পাঠানোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট আবেদনের নিষ্পত্তি করে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাই কোরর্ট বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেয়।
খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, মাহবুব উদ্দিন খোকন, কায়সার কামাল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা।
আদেশের পর মুরাদ রেজা সাংবাদিকদের বলেন, খালেদা জিয়ার ইনজেকশন বা ফিজিও থেরাপির প্রয়োজন হলে তিনি কারাগারেই তা নিতে পারেন। তাছাড়া তিনি অসুস্থ্য হলে, চিকিৎসার প্রয়োজন হলে হাই কোর্টের নির্দেশে গঠন করা চিকিৎসকদের বোর্ডের পরামর্শ নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।
“ওই চিকিৎসক বোর্ড যদি মনে করে উনার চেকআপ দরকার, সেটা জেলে গিয়েও করতে পারবেন। উনি এখনও বোর্ডের আন্ডারে। খালেদা জিয়াকে হাসপাতাল থেকে কারাগারে নেওয়ার বিষয়ে বেআইনি কিছু খুঁজে পায়নি আদালত।”
দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দি। তাকে রাখা হয়েছে নাজিমুদ্দিন রোডের পুরনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। সেখানে তিনিই একমাত্র বন্দি।
তাকে বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার আর্জি জানিয়ে একটি রিট আবেদন করা হলে হাই কোর্ট গত ৪ অক্টোবর কিছু নির্দেশনা ও পর্যবেক্ষণসহ তা নিষ্পত্তি করে দেয়। ওই আদেশের পর গত ৬ অক্টোবর খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) নেওয়া হয়।
সেখানে এক মাস চিকিৎসার পর গত ৮ নভেম্বর খালেদা জিয়াকে কারাগারে ফিরিয়ে নিয়ে নাইকো দুর্নীতি মামলার শুনানিতে হাজির করা হয়। বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের পক্ষ থেকে বলা হয়, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখন ‘যথেষ্ট স্থিতিশীল’। তারপরও প্রয়োজন হলে চিকিৎসকরা কারাগারে গিয়ে তাকে দেখে আসবেন।
কিন্তু বিএনপির পক্ষ থেকে সে সময় অভিযোগ করা হয়, খালেদা সুস্থতা নিশ্চিত না করে, তার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধানের অনুমোদন ছাড়াই তাকে হাসপাতাল থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এরপর আইনজীবী নওশাদ জমির গত রোববার হাই কোর্টে এই রিট আবেদন করেন। সেখানে বলা হয়, বিএসএমএমইউতে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ‘শেষ না করে’ বিএনপির চেয়ারপারসনকে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে; যা মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি।
খালেদা জিয়াকে কেন পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে না- তা জানতে রুল চাওয়া হয়েছিল রিটে। স্বরাষ্ট্রসচিব, কারা কর্তৃপক্ষ, বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষসহ নয় জনকে সেখনে বিবাদী করা হয়েছিল।
গত ১৩ নভেম্বর উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত সোমবার বিষয়টি নিষ্পত্তি করে আদেশ দিল।