ওই সময় পুলিশের তোলা ছবি, ভিডিওর পাশাপাশি প্রকৃত ঘটনা নিয়ে লিখিত প্রতিবেদন চেয়ে চিঠি দেবে সংস্থাটি। আগামী রোববারের মধ্যেই পুলিশের মহাপরিদর্শকের কাছে চিঠি পাঠানো হবে বলে ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার যুগ্মসচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান জানিয়েছেন।
দলীয় মনোনয়ন ফরম বিতরণের মধ্যে বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর ও পুলিশের দুটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়।
এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে পরস্পরকে দোষারোপ করেছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি।
ঘটনার পরপর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বৈঠক করে ইসির সঙ্গে। এসময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঘটনার জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করে বলেন, সরকার ভোটের পরিবেশ নষ্ট করছে।
সরকার ও ইসির আচরণের ওপর তাদের ভোটে থাকা না থাকা নির্ভর করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ইসিকে বিএনপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে দলটি।
এদিকে এ ঘটনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাস, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর আকতারুজ্জামান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কফিল উদ্দিনসহ দলটির দুই শতাধিক নেতাকর্মীকে আসামি করে তিনটি মামলা করেছে পুলিশ।
পুলিশ বলছে, বিএনপি নেতা-কর্মীরা বিনা উসকানিতে তাদের উপর হামলা চালালে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরে পুলিশের গাড়িতে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগে জড়িত অধিকাংশকেই তারা শনাক্ত করেছেন, যারা সবাই বিএনপি ও দলটির বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী।
এ ঘটনায় এরইমধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরীসহ ৬৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে নিপুণসহ বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
পুলিশের করা মামলায় বলা হয়েছে, মির্জা আব্বাস, রুহুল কবির রিজভী, আফরোজা আব্বাস, নবী উল্লাহ নবী, আকতারুজ্জামান ও কফিল উদ্দিনসহ দলীয় কার্যালয়ে উপস্থিত অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে ও মদদে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করতে এই হামলা চালানো হয়েছে।
এরপরেই মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে আট দশ হাজার জনের একটি মিছিল আসে এবং রাস্তা বন্ধ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে। তাদের একটি লেন ছেড়ে দিয়ে যান চলাচলের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলেও শোনেনি। পরে নেতাকর্মীদের নির্বাচন আচরণ বিধি মেনে চলার জন্য রুহুল কবির রিজভীকে মাইক দিয়ে বলানোর জন্য অনুরোধ করা হয়। কিন্তু তা না করে রাস্তায় অবস্থানরত কর্মীরা আকস্মিকভাবে পুলিশের উপর হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়।
“ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী পুলিশের কাছে পাঠানোর জন্য চিঠি প্রস্তুত করা হয়েছে। ইসির অনুমোদনের পরই রোববার তা পাঠানো হবে,” বলেন নির্বাচন পরিচালনা শাখার একজন কর্মকর্তা।
দলীয় কার্যালয়ে মনোনয়ন সংগ্রহ ও জমাকে কেন্দ্র করে মিছিল, শোডাউন হওয়ায় ‘আচরণবিধি লংঘন’ বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পুলিশ মহাপরিদর্শককে ১৩ নভেম্বর চিঠি দেয় নির্বাচন কমিশন। পরদিন নয়া পল্টনে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ওই সংঘর্ষ হয়।
ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বুধবার বলেছিলেন, পল্টনে সেদিন কী ঘটেছিল তা খতিয়ে দেখা হবে। এ বিষয়ে পুলিশ বিভাগ থেকে জানতে চাওয়া হবে।
“সুতরাং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্বাচন কমিশনের উপর ন্যস্ত।নির্বাচন কমিশন যেভাবে তাদের নির্দেশনা দেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেভাবে কাজ করবে।”