ভোটে যেন জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে:  ইউরোপীয় পার্লামেন্ট

বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন ‘শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক ও স্বচ্ছতার সঙ্গে’ হবে বলে আশা প্রকাশ করে সব রাজনৈতিক পক্ষকে ‘সহিংসতা ও উসকানির পথ’ পরিহারের আহ্বান জানানো হয়েছে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে গৃহীত এক প্রস্তাবে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Nov 2018, 06:23 PM
Updated : 16 Nov 2018, 07:24 PM

ফ্রান্সের স্ট্রাসবুর্গে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বিতর্কের পর গৃহীত ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, নির্বাচন হতে হবে এমনভাবে যাতে ‘জনগণের ইচ্ছার’ যথার্থ প্রতিফলন ঘটে।

আগামী ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপিও এবারের ভোটে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। 

গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যরা বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছেন। বিশেষ করে গণমাধ্যম, শিক্ষার্থী, অধিকার কর্মী ও বিরোধী দলের মত প্রকাশ ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের অধিকার ‘লঙ্ঘিত’ হওয়ায় তারা উদ্বিগ্ন।  

সরকারের ‘সমালোচনা করার কারণে’ মানুষ গ্রেপ্তার ও হয়রানির শিকার হচ্ছে এবং দমন-পীড়নের মাত্রা ‘ব্যাপক আকার’ ধারণ করেছে- এমন খবরে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এর নিন্দা জানিয়েছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট।   

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও তথ্যপ্রযুক্তি আইন জরুরি ভিত্তিতে সংশোধন করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রস্তাবে; যাতে এসব আইন বাংলাদেশের সই করা মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি ও সনদগুলোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হয়।

তবে মিয়ানমারের রাখাইনে নিপীড়নের শিকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় এবং সঙ্কট মোকাবেলায় ‘গঠনমূলক ভূমিকা’ নেওয়ায় বাংলাদেশের প্রশংসা করা হয়েছে ওই প্রস্তাবে।

ক্যাম্পের জীবনে গাদাগাদি করে থাকা রোহিঙ্গাদের জীবন মানের উন্নয়নে জমি বরাদ্দের পাশাপাশি আশ্রয় কেন্দ্রে ত্রাণ তৎপরতার দায়িত্বে থাকা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাজ সহজ করতে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমিয়ে আনার আহ্বান এসেছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট থেকে। 

ইউরোপীয় আইন প্রণেতারা মনে করছেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপদে, স্বেচ্ছায় এবং আত্মমর্যাদার সঙ্গে মিয়ানমারে ফেরার মত পরিস্থিতি এখনও সেখানে সৃষ্টি হয়নি। এ কারণে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর পরিকল্পো এই মুহূর্তে স্থগিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে তাদের প্রস্তাবে।   

সেই সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অন্যান্য দাতা সংস্থাগুলোকে বাংলাদেশে ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তার পরিমাণ আরও বাড়াতে বলেছেন তারা।

বাংলাদেশের পোশাক কারখানায় কাজের পরিবেশ উন্নয়নে গঠিত অ্যাকর্ডের মেয়াদ ফুরিয়ে আসার বিষয়টি নিয়েও উদ্বোগ প্রকাশ করা হয়েছে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে গৃহীত প্রস্তাবে। 

আসছে ৩০ নভেম্বর মেয়াদ শেষ হতে চলা অ্যাকর্ডের সব সুপারিশ মেনে নিয়ে তা বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের পক্ষ থেকে।