গাড়ি চালিয়ে অপরাধজনক নরহত্যার বহুল আলোচিত এই মামলায় সোমবার বাদীসহ দুজনের সাক্ষ্য নেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ।
মঙ্গলবার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ঠিক করে তিনি বলেন, আগামী ২২ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতি কার্যদিবসেই শুনানি নেবেন তিনি।
বিচারক ইমরুল কায়েশ রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষকে বলেন, এ মাসেই মামলাটির বিচার শেষ করে রায় দিতে চান তিনি।
আদালতের পেশকার ফয়েজ আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সাক্ষ্য দেওয়ার পর মামলার বাদী নিহত শিক্ষার্থী দিয়া খানমের বাবা জাহাঙ্গীর আলমকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। এরপর জাহাঙ্গীরের নিকটাত্মীয় মেহরাজ সাক্ষ্য দেন।
এই মামলায় মোট ৪১ জনকে সাক্ষী এবং ছয় প্রকার আলামত জব্দ দেখানো হয়। যার মধ্যে তিনটি বাস এবং তিনটি ড্রাইভিং লাইসেন্স।
গত ২৫ অক্টোবর ছয় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর ১ নভেম্বর মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। তার প্রায় দুই মাস আগে এই মামলার অভিযোগপত্র জমা দিয়েছিলেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক কাজী শরীফুল ইসলাম।
এই মামলায় আসামিরা হলেন- জাবালে নূরের মালিক মো. শাহাদাত হোসেন আকন্দ ও জাহাঙ্গীর আলম, চালক মাসুম বিল্লাহ, হেলপার মো. এনায়েত হোসেন, চালক মো. জোবায়ের সুমন ও হেলপার মো. আসাদ কাজী।
এদের মধ্যে মালিক জাহাঙ্গীর আলম ও হেলপার আসাদ কাজী পলাতক। গ্রেপ্তার শাহাদাত হোসেন, মাসুম বিল্লাহ ও জোবায়ের সুমন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
এর মধ্যে মাসুমের বাসটি গত ২৯ জুলাই ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে শিক্ষার্থীদের উপরে উঠে গিয়েছিল, তাতে নিহত হন দিয়া খানম মিম ও আবদুল করিম রাজীব। ওই বাসটির মালিক শাহাদাত।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, কালশী ফ্লাইওভার থেকে নামার মুখে জাবালে নূরের দুটি বাস পাল্লা দেওয়ার সময় একটি এমইএস বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়ানো শিক্ষার্থীদের উপর উঠে যায়।
মিম ও করিমের মৃত্যুর পর শিক্ষার্থীদের নজিরবিহীন আন্দোলনে এক সপ্তাহ অচল ছিল ঢাকার সড়ক, আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন জেলায়। শিক্ষার্থীদের সব দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করতে হয় সরকারকে।
ঘটনার দিনই ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেন নিহত মিমের বাবা দূর পাল্লার বাসের চালক জাহাঙ্গীর আলম।
গত ৬ সেপ্টেম্বর ডিবির পরিদর্শক কাজী শরীফুল ইসলাম ঢাকা সিএমএম আদালতে ছয় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। অভিযোগপত্রে দণ্ডবিধির ২৭৯, ৩২৩, ৩২৫, ৩০৪ ও ৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারা অর্থাৎ অপরাধজনক নরহত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
এই সংক্রান্ত খবর