ভোট নিয়ে ৩১ অক্টোবর আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় বসছে ইসি

নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময়সূচির ঘোষণার প্রস্তুতির মধ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক ডেকেছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Oct 2018, 07:09 PM
Updated : 23 Oct 2018, 07:17 PM

৩১ অক্টোবর সকালে ইসির সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠেয় ভোটের ‘প্রস্তুতিমূলক বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ বিষয়ক’ এই সভার আলোচ্যসূচিতে এক ডজন বিষয় রাখা হয়েছে।

ইসির অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তফসিলের আগে আমাদের নেওয়া সব প্রস্তুতির বাস্তবায়নের সুবিধার্থে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়-বিভাগের সহযোগিতার জন্যই এ আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা। সমন্বয়ের জন্য এক প্রকার চূড়ান্ত প্রস্তুতি সভা এটা।”

এ সভায় ভোটকেন্দ্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার, মালামাল পরিবহন, পরীক্ষার সময়সূচি পর্যালোচনা, ঋণখেলাপির তথ্য, আগাম প্রচার সামগ্রী অপসারণ, নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ সার্বিক বিষয় তুলে ধরা হবে বলে জানান তিনি।

ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে এ  বৈঠকে উপস্থিতির জন্যে ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার যুগ্মসচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়।

১ নভেম্বর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সিইসিসহ নির্বাচন কমিশনারদের দেখা করার কথা রয়েছে। এরপর নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তফসিলের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান ইসির অতিরিক্ত সচিব।

মনোনয়ন দাখিল, বাছাই, প্রত্যাহারের শেষ সময় এবং প্রতীক বরাদ্দ শেষে প্রচারের পর্যাপ্ত সময় দিয়ে তফসিল ঘোষণা থেকে ভোটের দিন পর্যন্ত ৪০-৪৫ দিন ব্যবধান রাখা হয়ে থাকে।

নবম সংসদ নির্বাচনে ৪৭ দিন সময় নিয়ে ভোটের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল। দশম নির্বাচনে ৪২ দিন সময় নিয়ে তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল।

এক ডজন বিষয়

ভোটকেন্দ্রের স্থাপনা মেরামত ও ভৌত অবকাঠামো সংস্কার; পার্বত্য দুর্গম এলাকায় হেলিকপ্টারে নির্বাচনী মালামাল পরিবহন এবং ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের আনা-নেওয়ার পদক্ষেপ; নির্বাচনী প্রচার; পর্যবেক্ষক নিয়োগ; পোস্টাল ব্যালটে ভোটদানে সহায়তা; নির্বাচনে আইন শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে পরিকল্পনা; ঋণখেলাপি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ; নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালনে নির্বাহী হাকিম নিয়োগ; বার্ষিক ও পাবলিক পরীক্ষার সময়সূচি পর্যালোচনা; আবহাওয়ার পূর্বাভাস; আগাম প্রচারণা সামগ্রী অপসারণ ও বিবিধ বিষয় সভার আলোচ্যসূচিতে রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর মহাব্যবস্থাপক, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, তথ্য মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগের যুগ্মসচিব বা তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাদের বৈঠকে ডাকা হয়েছে।

সেই সঙ্গে তথ্য অধিদপ্তরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা, ডাক অধিদপ্তর, গণযোগাযোগ অধিদপ্তর, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক; স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী; মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড এর চেয়ারম্যান এবং আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালককে সভায় অংশ নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

২৭ অক্টোবর ইভিএমে মেলা ৮ অঞ্চলে

ইসির অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান জানান, ইলেকট্রনিং ভোটিং মেশিন (ইভিএম) প্রদর্শনী মেলা হবে ২৭ অক্টোবর। এদিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার খুলনায়, নির্বাচন কমিশনাররা, ইসি সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও এনআইডি উইংয়ের মহাপরিচালক আলাদা আলাদা অঞ্চলে ইভিএমে মেলা উদ্বোধন করবেন।

সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারে এখনও আইন সংস্কার হয়নি।

জানতে চাইলে মোখলেসুর বলেন, “ইভিএম নিয়ে আমাদের আইনগত সংস্কারের আশা রাখছি। তবে ইভিএম মেলা জনসচেতনতার জন্য করা হচ্ছে। স্থানীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার তো অব্যাহত রয়েছে।”

ইসি কর্মকর্তারা জানান, ভোটকে সামনে রেখে সম্ভাব্য প্রার্থীদের সব ধরনের আগাম প্রচার সামগ্রী স্ব উদ্যোগে তফসিল ঘোষণার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সরাতে নির্দেশ দেওয়া হবে।

নির্ধারিত সময়ে অপসারণে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়ার পর আচরণ বিধি লঙ্ঘনে অভিযোগে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।