নির্বাচনে অংশ নিতেই ‘ঐক্যজোট’: তোফায়েল

কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্য নয়, ‘ঐক্যজোট’ হয়েছে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্যই এই জোট হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Oct 2018, 11:27 AM
Updated : 22 Oct 2018, 11:27 AM

অন্যদিকে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট বলেছেন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য অবশ্যই গ্রহণযোগ্য বিরোধীদল থাকতে হবে।

সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তোফায়েল ও বিদায়ী মার্কিন দূত।

সাংবাদিকদের প্রশ্নে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল বলেন, “ঐক্যজোট হয়েছে নির্বাচন করার জন্যই, এটা আমার বিশ্বাস। তারা সিলেটে ২৪ তারিখ থেকে শুরু করছে, সেখানে জনসভা করবে। চট্টগ্রাম যাবে, রাজশাহী যাবে- নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেল। সুতরাং ভাববেন না যে নির্বাচনে কেউ আসবে না।

“বিএনপি কামাল হোসেনের নেতৃত্ব মেনে নিয়েছে এবং তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্যই এই জোট করেছে। আমরাও চাই আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হোক, সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।”

একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তোফায়েল বলেন, তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর জোর দিয়ে বলেছেন, একটা দেশ অস্থিতিশীল হলে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে বিএনপির নেতৃত্বে যে জ্বালাও-পোড়াও হয়েছিল সে বিষয়েও রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনা করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল।

“আজকে তারা উপলব্ধি করেছে এটা রাজনীতির পথ নয়, যার জন্য তারা জনসভার দিকে যাচ্ছে। ২০১৪ সালে নির্বাচন না করে তারা যে ভুল করেছে সেটা বুঝতে পেরেছে।

“আমাদের প্রত্যাশা যতই জোট করুক এটার মূল লক্ষ্য হল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা। রাষ্ট্রদূতকে বলেছি, সংবিধানের বাইরে আমরা যাব না। সংবিধানের বাইরে যাওয়ার কোনো ‍সুযোগ নেই।”

ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্য নয়, ঐক্যজোট হয়েছে মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, “জাতীয় ঐক্য হলে সকল দল একমত হয়ে যায়।”

ঐক্যজোটের দাবিগুলো সংবিধান সম্মত ও গ্রহণযোগ্য নয় জানিয়ে তিনি বলেন, এই সংসদই বহাল থাকবে, মধ্যবর্তী নির্বাচন হলে সংসদ বাতিল হয়।

বিএনপি না এলেও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে কি না- সেই প্রশ্নে তোফায়েল বলেন, “কোনো দলকে বাদ দিয়ে আমরা নির্বাচনে অংশ নিতে চাই না। কোনো দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কি করবে না সেটা তাদের সিদ্ধান্ত।”

অবাধ, নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনকে গণতন্ত্রের মূল চাবিকাঠি বলে মনে করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট।

তিনি বলেন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব যদি সব দল ভোটে অংশ নেয় এবং শান্তিপূর্ণভাবে সভা-সমাবেশ করতে পারে এবং নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে কোনো সহিংসতা না হয়।

“গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য অবশ্যই গ্রহণযোগ্য বিরোধীদল থাকতে হবে।”

বিএনপি অংশ না নিলে সেটাকে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন বলবেন কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “…গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সব দল নির্বাচনে অংশ নেবে আমরা সেটাই চাই।”

বিএনপির সঙ্গে আলোচনার সময় তাদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে বলেছেন কি না- জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, “শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনে অংশ নিন, সবার প্রতিই আমাদের এই আহ্বান।”

গণতন্ত্রের স্বার্থে গণমাধ্যমগুলোকে সঠিক তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন তৈরিরও আহ্বন জানান বার্নিকাট।

যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশে বিনিয়োগের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, “এতে আমরা সন্তুষ্ট নই, আমরা আরও বিনিয়োগ করতে চাই।”

রানা প্লাজা ধসের পর পোশাক কারখানার উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রশংসা করেন তিনি।

বাংলাদেশে প্রায় তিন বছর দায়িত্ব পালন করে আসা বার্নিকাট বাংলায় বলেন, “আবার দেখা হবে, অনেক অনেক ধন্যবাদ।”

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা যুক্তরাষ্ট্রে সব থেকে বেশি রপ্তানি করি। বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ৭ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার, ব্যবসা-বাণিজ্য আরও বৃদ্ধি পাবে।”