জাতিসংঘের আদলে ঢাবিতে ‘ডানমুন’ শুরু

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের আদলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে ‘ঢাকা ইউনিভার্সিটি ন্যাশনাল মডেল ইউনাইটেড নেশনস (ডানমুন) ২০১৮’।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Oct 2018, 05:54 PM
Updated : 21 Oct 2018, 05:54 PM

রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে চার দিনব্যাপী এই আয়োজনের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম।

ছায়া জাতিসংঘ বা এমইউএন হচ্ছে একটি অতিরিক্ত পাঠ্যক্রমিক কার্যকলাপ যেখানে শিক্ষার্থীরা জাতিসংঘের কমিটিগুলোকে অনুকরণ করে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের ভূমিকা পালন করে।

সারা বিশ্বেই শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এই ছায়া জাতিসংঘের ধারনাটির চর্চা হয় যার ফলে শিক্ষার্থীদের গবেষণা, বিতর্ক এবং লেখার দক্ষতার পাশাপাশি সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা, দলবদ্ধতা এবং নেতৃত্বের দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।

ঢাকা ইউনিভার্সিটি ন্যাশনাল মডেল ইউনাইটেড ন্যাশনস এ্যাসোসিয়েশনের (ডিইউমুনা) এ আয়োজনে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ব ব্যাংকের অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান শামসুর রাহমান, ঢাকা আহছানিয়া মিশনের যোগাযোগ ও জনসংযোগ পরিচালক কাজী রেজা এবং ডিইউমুনার অ্যালামনাই ফায়েজ আহমেদ।

চার দিনব্যাপী এই সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, আফগানিস্তান, সোমালিয়া, লেবানন ও নাইজেরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ৫০০ শিক্ষার্থী। ছায়া জাতিসংঘের এই সম্মেলনে এ বছর অংশগ্রহণকারীরা আলোচনা করবেন ‘অর্থনৈতিক নিরাপত্তা শক্তিশালীকরণের মাধ্যমে দীর্ঘস্থায়ী সমৃদ্ধি’ বিষয়ের ওপর।

উন্নয়নের পশ্চিমা মডেলগুলো বাংলাদেশেও প্রয়োগ করার ফলে এদেশে লিঙ্গ বৈষম্যের কারণে নারীরা পিছিয়ে পড়ছেন বলে দাবি করেন  অধ্যাপক সাদেকা হালিম।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশে প্রথম স্বাধীনতা পরবর্তীতে যে ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম এসেছে তা হচ্ছে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ। সে বিষয়ে আমি গবেষণা করতে গিয়ে দেখেছি, বাংলাদেশের নারীদের বলা হতো তোমরা সবাই বার্থ কন্ট্রোল পিলস খাও, কিন্তু পুরুষতান্ত্রিক এই সমাজে কন্ডম ব্যবহারের প্রবণতা এখনও কম। যে পিলগুলো মেয়েদের দেওয়া হয় তাতে তাদের স্বাস্থ্যের চরম অবনতি হচ্ছে। পপুলেশন কন্ট্রোলের এই যে একটা পলিটিক্স এবং জনতাত্ত্বিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে উন্নয়নের প্রথম শিকার হয়েছে নারীরা। এই বিষয়গুলো শিক্ষার্থীদের বুঝতে হবে।”

বিশ্ব ব্যাংকের অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন জাতিসংঘের গৃহীত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার নানা তথ্য উপাত্ত তুলে ধরে বলেন, “এটার মধ্যে আছে কিছু ভালো সংবাদ, আবার কিছু খারাপ সংবাদও আছে। ভালো সংবাদগুলো হচ্ছে, মাত্র এক দশক আগের চেয়েও এখন বেশি সংখ্যক মানুষ ‘ভালো জীবনযাপন’ করছে, ২০০০ সাল থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে পাঁচ বছরের কম শিশুমৃত্যুর হার ৪৭ শতাংশ কমেছে। আর খারাপ সংবাদ হচ্ছে, ২০১৬ সালে পৃথিবীজুড়ে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা ২০১৫ সাল থেকে ৩৮ মিলিয়ন বেড়ে দাড়িয়েছে ৮১৫ মিলিয়নে। ১৮ টি দেশে খাদ্যে অনিরাপত্তার কারণ হিসেবে সংঘাতের কথাও বলা আছে রিপোর্টে।”

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয় ছায়া জাতিসংঘের মহাসচিব রাকিব-উজ-জামান রাব্বি।  ২৪ অক্টোবর এই সম্মেলন শেষ হবে।

এ নিয়ে সপ্তমবারের মতো ডানমুনের আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গড়া এই সংগঠনটি। সম্মেলনে মিডিয়া পার্টনার হিসেবে আছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।