শহীদ পরিবারের জমি দখলের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা

ঢাকার নবাবপুর রোডে স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত শহীদ একেএম সামসুল হক খানের পরিবারের নামে বরাদ্দ করা জমি জোর করে দখল করে ভবন ভেঙে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Oct 2018, 07:12 AM
Updated : 20 Oct 2018, 07:12 AM

এ বিষয়ে থানা ও জেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও প্রতিকার ‘না পাওয়ায়’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এ পরিবারের সদস্যরা।

১৯৭১ সালে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক একেএম সামসুল হক খানকে ময়নামতি ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে হত্যা করা হয়। ২০১০ সালে তাকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার দেয় সরকার।

পরিবারের সদস্যরা বলছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালে সামসুল হক খানের মা মাসুদা খানমকে ঢাকার নবাবপুর রোডের ২২১ নম্বর হোল্ডিংয়ে চার কাঠার প্লটটি ইজারা দেন। পরে তিনি উত্তরসূরি হিসেবে তার আরেক ছেলে আজহারুল হক খানকে ওই জমি হস্তান্তর করেন।

পরিবারের পক্ষ থেকে ওই জমিতে মাসুদা করপোরেশন ও এসএইচকে করপোরেশন নামে দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়।

সামসুল হক খানের নাতি শামসুল হাসান খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রতি বছর তারা নিয়মিত লিজের টাকা পরিশোধ করে আসছেন। ২০১৭ সালেও লিজ মানির এক লাখ চব্বিশ হাজার ছয়শ পঁচাত্তর টাকা পরিশোধ করেছেন।

“শেখ জাবেদ উদ্দিন নামে স্থানীয় এক ব্যবসায়ীসহ কয়েকজন ওই জমি আর বাড়ি দখলের জন্য দীর্ঘদিন ধরে আমাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছিল। এ ব্যাপারে থানায় একাধিকবার জিডিও করা হয়েছে। সর্বশেষ গত ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় জাবেদের লোকজন জমি দখল করে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।”

ওই ঘটনার পরদিনই তারা এ বিষয়ে বংশাল থানায় মামলা করেন বলে জানান শামসুল হাসান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, ওই জমির মূল মালিক ছিলেন গোপীনাথ বসাক নামে এক ব্যক্তি। তিনি স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি আর ফিরে আসেননি। সরকার তখন জমিটি অর্পিত সম্পত্তি ঘোষণা করে। পুরান ঢাকায় এ রকম কয়েকশ বাড়ি অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে লিজ দেওয়া হয়েছে।

“আবার কিছু জায়গা দখলদাররা ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে দখল করে নিয়েছে। আমাদের জমির পাশে আট কাঠার ২২২ নম্বর প্লটও জাবেদ ও তার ভাই আবেদ দখল করে বিশাল টাওয়ার নির্মাণ করেছে। এখন আমাদের জমিটি তারা দখল করে ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে।”

এ ব্যাপারে অভিযোগ করেও প্রতিকার পাওয়া যায়নি জানিয়ে শহীদ পরিবারের এই সদস্য বলেন, “তারা আমাদের পাঁচ কোটি টাকার মালামাল লুটপাট করে ভবন ভেঙে ফেলেছে। আমরা থানায় মামলা করলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ডিসির বাছ আবেদন করা হলেও কোনো সাড়া পওয়া যায়নি।”

শামসুল হাসান খান বলেন,  “আমরা এখন অসহায়। এ ব্যাপারে আমরা বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”   

এ ব্যাপারে বংশাল থানার ওসি সাহিদুর রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “থানায় শামসুল হাসান খান বাদী হয়ে যে মামলা করেছিলেন, ওই মামলায় জাবেদ উদ্দিনসহ ২৫-৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। জাবেদ উদ্দিন বর্তমানে জামিনে আছেন।”

জমি দখল ও লুটপাটের অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে জাবেদ উদ্দিন টেলিফোনে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই বিষয় নিয়ে আমি পরে কথা বলব।”

তবে পরে কয়েকবার ফোন করা হলেও তাকে আর পাওয়া যায়নি।