তদন্ত প্রতিবেদন পেয়েই ‘ঘ’ ইউনিটের ফল: ঢাবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের আগেই ফল প্রকাশ করা হয়েছে বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের প্রেক্ষাপটে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Oct 2018, 01:59 PM
Updated : 19 Oct 2018, 01:59 PM

শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পরই ফল প্রকাশ করা হয়েছে।

গত শুক্রবার ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শুরুর ৩১ মিনিট পরই হাতে লেখা প্রশ্নপত্রের ১৪টি ছবি সাংবাদিকদের হাতে আসে। এরপর প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠলে ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে তাদেরকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলে কর্তৃপক্ষ।

গত মঙ্গলবার ফল প্রকাশের কথা থাকলেও তা স্থগিত করা হয়।

ফাইল ছবি

তবে তার আগের দিন সোমবার রাতেই তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন উপাচার্যের কাছে জমা দেয় বলে জানিয়েছিলেন কমিটির সদস্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক মাকসুদুর রহমান ।

প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মঙ্গলবার বিকালে ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়, যেখানে ২৬ দশমিক ২১ শতাংশ শিক্ষার্থী ভর্তির যোগ্য বিবেচিত হন।

এরপর বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের আহ্বায়ক ওবায়দুল ইসলাম  ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল বাতিল ও পুনরায় পরীক্ষা গ্রহণ এবং প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়ে গণমাধ্যমে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠান। 

সেখানে বলা হয়, “আমরা আশা করেছিলাম কর্তৃপক্ষ এবার অভিযোগের সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য তদন্ত সম্পন্ন করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। কিন্তু এবারো আমরা কর্তৃপক্ষের দায় এড়ানোর প্রবণতা দেখলাম। সর্বমহলের সমালোচনার পরিপেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার আগেই ফলাফল প্রকাশ করা হলো। এ ফলাফল কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”

এ বিষয়ে শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অবস্থান জানিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক  প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ সাপ্তাহিক ছুটি ও বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবসের ছুটির মধ্যেও অত্যন্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রণয়ন করে ১৫ অক্টোবর ২০১৮ সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের নিকট মতামতসহ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।”

এতে আরো বলা হয়, “রিপোর্ট পাওয়ার পর উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান কর্তৃক ১৬ অক্টোবর ২০১৮ মঙ্গলবার অপরাহ্ন ৩:৩০টায়  ‘ঘ’ ইউনিটের ফল প্রকাশ করা হয়। অতএব এক্ষেত্রে বিভ্রান্তির কোনো অবকাশ নেই।”

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের পক্ষ থেকে বিএনপিপন্থী সাদা দলের বক্তব্য যাচাই করে দেখা যায়, ১৫ অক্টোবর রাতে তদন্ত কমিটির প্রধান ও বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। 

তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার বিষয়টি সেসময় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে  নিশ্চিত করেন উপাচার্য।  উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সামাদ ও তদন্ত কমিটির সদস্য অধ্যাপক মাকসুদুর রহমানের পক্ষ থেকেও প্রতিবেদন জমা দেওয়ার বিষয়টি জানানো হয়েছিল।

তবে তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে বিস্তারিত জানাননি উপাচার্য।