এই টিকার পেটেন্ট পেতে গত ১ অক্টোবর বাংলাদেশের পেটেন্টস, ডিজাইনস ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরে আবেদন করা হয়েছে এবং ভারতে আবেদন দাখিলের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ মঙ্গলবার ঢাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
ক্ষুরা রোগ গবাদি পশুর একটি অন্যতম প্রধান সংক্রামক রোগ, যাতে গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, শুকরসহ অন্যান্য প্রাণী আক্রান্ত হয়ে থাকে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ২০১৭ সালের হিসেব অনুযায়ী, বাংলাদেশে ক্ষুরা রোগের প্রতি সংবেদনশীল গৃহপালিত প্রাণীর সংখ্যা প্রায় ৫ কোটি ৫১ লাখ।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের উচ্চ শিক্ষা মানোন্নয়ন প্রকল্পের (হেকেপ) আওতায় এই টিকা উদ্ভাবনে গবেষণা হয়। এজন্য ল্যাব স্থাপনসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় মেটাতে অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগকে দুটি উপ-প্রকল্পের আওতায় হেকেপ ১০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা দেয়।
মন্ত্রী নাহিদ বলেন, “ক্ষুরা রোগ বাংলাদেশে গবাদি প্রাণীর একটি অন্যতম প্রধান সংক্রামক ব্যাধি। এ রোগের কারণে বাংলাদেশে প্রতিবছর ১২৫ মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়।”
ক্ষুরা রোগ প্রতিরোধে ব্যবহৃত টিকা প্রধানত আমদানি করা হয় জানিয়ে নাহিদ বলেন, এসব টিকা উৎপাদনে যে ভাইরাস ব্যবহৃত হয় তা এদেশে বিদ্যমান ভাইরাস থেকে ভিন্ন কিংবা টিকাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ এন্টিজেন না থাকায় প্রায়ই সেগুলো কাজ করে না।
“উদ্ভাবিত এই টিকা বাংলাদেশে বিদ্যমান ক্ষুরা রোগের তিন ধরনের ভাইরাসের সকল প্রকার সংক্রমণ থেকে গবাদি প্রাণীকে অত্যন্ত সফলভাবে সুরক্ষা দিতে সক্ষম হবে এবং এর মূল্য বাজারে প্রচলিত ভ্যাকসিনের চেয়ে অনেক কম হবে।”
‘ট্রাইভ্যালেন্ট’ এই টিকা তৈরিতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে এবং খামারি পর্যায়ে প্রতিমাত্রা টিকা ৬০-৭০ টাকার মধ্যে সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে জানান নাহিদ।
গবেষক দলের প্রধান ঢাবি অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বর্তমানে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যর দায়িত্বে আছেন।
সংবাদ সম্মেলনে গবেষণা দলের সব সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে টিকা উদ্ভাবন সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত বিস্তারিতভাবে তুলে ধরার পাশাপাশি এ সংক্রান্ত নানা প্রশ্নের জবাব দেন অধ্যাপক আনোয়ার।
তিনি জানান, ক্ষুরা রোগের টিকা উদ্ভাবনে গবেষণার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগে অত্যাধুনিক গবেষণাগার তৈরি করে সেখানেই গবেষণা করা হয়।
ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, হেকেপ পরিচালক গৌরাঙ্গ চন্দ্র মোহান্ত, ইউজিসির সদস্য ইউসুফ আলী মোল্লা ও আক্তার হোসেন এবং অধ্যাপক জাফর ইকবাল অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।