সম্পাদক পরিষদের দাবিতে সুপ্রিম কোর্ট বারের সমর্থন

সম্পাদক পরিষদের সাত দফা দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে সংসদের শেষ অধিবেশনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আলোচিত নয়টি ধারার সংশোধন ও বাতিল চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি। 

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Oct 2018, 11:11 AM
Updated : 16 Oct 2018, 11:11 AM

সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবির কথা জানান সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন, যিনি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যানও।

তার দল বিএনপিও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিরোধিতা করে আসছে।

আইনটিকে নিবর্তনমূলক আখ্যা দিয়ে লিখিত বক্তব্যে জয়নুল আবেদীন বলেন, “জাতীয় সংসদে সদ্য পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি বাস্তব হুমকি বলে আমরা মনে করি।

“অতি সম্প্রতি বিভিন্ন মহলের ব্যাপক আপত্তি ও মতামত উপেক্ষা করে পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। এই আইন নিয়ে জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।”

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩ ধারা স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মুক্ত গণমাধ্যমের পরিপন্থি দাবি করে আপত্তি জানিয়ে সম্পাদক পরিষদসহ সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন। তাদের আপত্তির সুরাহা না করেই গত ১৯ সেপ্টেম্বর সংসদে ওই আইন পাস করা হয়।

প্রতিবাদে ২৯ সেপ্টেম্বর মানববন্ধনের কর্মসূচি দেয় সম্পাদক পরিষদ। তবে পরে সরকারের অনুরোধে কর্মসূচি স্থগিত করে তারা সচিবালয়ে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের সঙ্গে বৈঠক করেন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কয়েকটি ধারা বাতিলের দাবিতে সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সম্পাদক পরিষদের মানববন্ধন

সেখানে আইনের নয়টি ধারা নিয়ে সম্পাদক পরিষদের আপত্তির বিষয়ে আলোচনা হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, তাদের আপত্তির বিষয়গুলো মন্ত্রিসভায় আলোচনার জন্য তোলা হবে।

এরপর গত ৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সংসদে পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা বিলে সই করলে তা আইনে পরিণত হয়।

কিন্তু বিষয়টি মন্ত্রিসভায় না ওঠায় সোমবার ঢাকায় মানববন্ধন করে সম্পাদক পরিষদ।

তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারার চেয়েও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নয়টি ধারাকে বেশি উদ্বেগজনক বলেন জয়নুল আবেদীন।

“এ আইনে শুধুমাত্র সাংবাদিক সমাজেই নয়, আইনজীবীসহ অন্যান্য শ্রেণি-পেশার মানুষেরাও এই আইনের ব্যাপারে ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

“তাই আমরা দেশ ও গণতন্ত্র, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং মানুষের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার লক্ষ্যে এই আইনের নিবর্তনমূলক ধারা অনতিবিলম্বে বাতিলের জোর দাবি করছি।”

সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকন, সহ-সভাপতি মো. গোলাম মোস্তফা ও মো. গোলাম রহমান ভূঁইয়া, সহ-সম্পাদক কাজী মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীনসহ সমিতির বিএনপিপন্থী সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নয়টি ধারা সংশোধন চেয়ে সরকারকে আইনি নোটিস দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এস এম জুলফিকার আলী জুনু।

আইনটির ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩১, ৪৩ ও ৫৩ ধারা সংশোধনের উদ্যোগ না নিলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে নোটিসে বলা হয়েছে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে আইনজীবী জুলফিকার বলেন, “মঙ্গলবার রেজিস্ট্রি ডাকযোগে তথ্যমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, মন্ত্রী পরিষদ সচিব, তথ্য সচিব, আইন সচিব বরাবর নোটিসটি পঠানো হয়েছে।

“তারা ৩০ দিনের মধ্যে এই নয়টি ধারা সংশোধনের উদ্যোগ না নিলে সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জনস্বার্থে রিট মামলা করা হবে।”