পুলিশ সোমবার রাতে ওই বাড়ি দুটি ঘিরে ফেলার পর সকালে আশপাশের বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়; ৫০০ গজের মধ্যে জারি করা হয় ১৪৪ ধারা।
পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট ও র্যাব সদস্যরা দুটি এলাকা ঘিরে রেখেছেন। দুই জায়গাতেই উপস্থিত রয়েছে ফায়ার ব্রিগেডের গাড়ি ও চিকিৎসকদল।
সোয়াট সদস্যরা অভিযান শুরুর প্রস্তুতি নেওয়ার পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শেখেরচরের ভগিরথপুরে সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানার দিক থেকে গুলির শব্দ পাওয়া যায়।
বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কয়েক দফা গুলির শব্দ শুনতে পান দূরে অবস্থান নিয়ে থাকা সংবাদকর্মীরা।
এই অভিযানের মধ্যেই ভগিরথপুরে উপস্থিত হন পুলিশ মহাপরিদর্শক জাবেদ পাটোয়ারী। তিনি জানান, সোয়াটের এই জঙ্গিবিরোধী অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন গর্ডিয়ান নট’
ঢাকা মহানগর পুলিশের এই অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, আশপাশের লোকজনের যাতে ক্ষতি না হয় সে বিষয়ে পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। সোয়াট অভিযান শুরুর আগে ‘জঙ্গিদের’ সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে, যাতে তারা আত্মসমর্পণ করে।
নরসিংদীর পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট ও পুলিশ সদরদপ্তরের ল ফুল ইন্টারসেপশন সেলের (এলআইসি) সদস্যরা সোমবার রাত ৯টার দিকে ওই বাড়ি দুটি ঘিরে ফেলে। পরে র্যাব তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। মঙ্গলবার ভোরে সোয়াট সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান।
এর মধ্যে মাধবদী পৌরসভার ছোট গদাইরচরের সাত তলা নিলুফা ভিলার মালিক হাজী মো. আফজাল হোসেন নামের এক ব্যক্তি। ওই ভবনের পঞ্চম তলার একটি ফ্ল্যাটে জঙ্গিরা অবস্থান করছে বলে পুলিশের ধারণা। ভবনটির প্রথম থেকে তৃতীয় তলা পর্যন্ত রয়েছে মিফতাহুল জান্নাহ মহিলা মাদ্রাসা।
আর শেখেরচরের ভগিরথপুরের পাঁচ তলা বাড়িটির মালিক বিল্লাল হোসেন নামের এক কাপড় ব্যবসায়ী। ওই ভবনের পঞ্চম তলায় এক নারীসহ দুই জঙ্গি অবস্থান করছে বলে খবর রয়েছে পুলিশের কাছে।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, আশপাশের বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার পর সকালে দুই বাড়ির গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। ফায়ার ব্রিগেডের গাড়ি এনে রাখা হয় দুই বাড়ির কাছাকাছি।
সকালে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দলের সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হন। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি আবদুল্লাহ আল মামুন এবং নরসিংদীর সিভিল সার্জন ভগিরথপুরে আসেন।
এর আগে গত ৫ অক্টোবর চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক লাগোয়া এক বাড়িতে র্যাবের অভিযানে গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের পর দুই জনের ছিন্নভিন্ন লাশ পাওয়া যায়।
প্রায় আট ঘণ্টার ওই অভিযান শেষে সেখান থেকে তিনটি পিস্তল, একটি একে-২২ রাইফেল ও বোমা ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।