ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েসের আদালতে এ শুনানি হবে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন এ আদালতের পেশকার ফয়েজ আহমেদ।
গত ৬ সেপ্টেম্বর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক কাজী শরীফুল ইসলাম এ মামলায় ছয়জনের বিরুদ্ধে ঢাকা মুখ্য মহানগর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। অভিযোগপত্রে দণ্ডবিধির ২৭৯, ৩২৩, ৩২৫, ৩০৪ ও ৩৪ ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।
এর মধ্যে ৩০৪ ধারায় অভিযোগের বিষয় হল ‘অপরাধজনক নরহত্যা’। অর্থাৎ খুনের উদ্দেশ্য না থাকলেও প্রাণহানি ঘটেছে। এ ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
অভিযোগপত্রে ৪১ জনকে সাক্ষী এবং ছয় প্রকার আলামত জব্দ দেখানো হয়, যার মধ্যে রয়েছে তিনটি বাস এবং তিনটি ড্রাইভিং লাইসেন্স।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের একজন বিচারক।
মামলার আসামিরা হলেন- জাবালে নূরের মালিক মো. শাহাদাত হোসেন আকন্দ, চালক মাসুম বিল্লাহ, হেলপার মো. এনায়েত হোসেন, চালক মো. জোবায়ের সুমন, অপর বাসমালিক মো. জাহাঙ্গীর আলম ও হেলপার মো. আসাদ কাজী।
এদের মধ্যে মো. জাহাঙ্গীর আলম ও মো. আসাদ কাজী পলাতক। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে।
আসামিদের মধ্যে শাহদাত হোসেন, মাসুম বিল্লাহ ও জোবায়ের সুমন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
ক্যান্টনমেন্ট থানার এ মামলার নথিপত্রে দেখা যায়, গত ৭ অক্টোবর অভিযোগপত্রভুক্ত ছয় আসামির মধ্যে পলাতক দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা যায়নি মর্মে প্রতিবেদন দেয় পুলিশ।
এরপর মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ায় ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম কায়সারুল ইসলাম সেটি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলির আদেশ দেন।
গত ২৯ জুলাই কালশী ফ্লাইওভার থেকে নামার মুখে এমইএস বাসস্ট্যান্ডে ১৫/২০ জন শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে ছিলেন। জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস ফ্লাইওভার থেকে নামার সময় মুখেই দাঁড়িয়ে যায়।
এ সময় পেছন থেকে আরেকটি দ্রুত গতিসম্পন্ন জাবালে নূরের বাস ওভারটেক করে সামনে আসতেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের ওপর উঠে যায়। চাকার নীচে পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান দিয়া খানম মিম ও আবদুল করিম রাজীব। আহত হন ১৫-২০ জন শিক্ষার্থী।
এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই ক্যান্টনমেন্ট থানায় মিমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম মামলা দায়ের করেন।
দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে এক সপ্তাহ ঢাকার সড়ক অচল থাকে। আন্দোলনের মুখে সরকার সড়কে নিরাপত্তায় কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেয়। শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন রাজনৈতিক অঙ্গনেও উত্তেজনা ছড়ায়।