তিন বছর আগে ওই দুর্গম পর্বতে একবার অভিযানে গিয়েও ‘অসুস্থতা ও বিরূপ আবহাওয়ার’ কারণে ফিরে আসতে হয়েছিল মুহিত ও বাংলা মাউন্টেইনিয়ারিং অ্যান্ড ট্রেকিং ক্লাবের অভিযাত্রী দলকে।
এবার তারা সেখানে যাচ্ছেন শরতের শেষ ভাগে। হিমালয়ের পূর্ব অংশে এই অভিযানে বেইজ ক্যাম্প পর্যন্ত মুহিতের সঙ্গী হচ্ছেন তরুণ অভিযাত্রী ইফফাত ফারহানা, কাওসার রূপম, মারুফ সালাম, আরিফুল ইসলাম ও সুজয় সেনগুপ্ত। বাকি পথ শেরপাকে নিয়ে একাই পাড়ি দেবেন ৪৮ বছর বয়সী মুহিত।
শুক্রবার ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযান নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন মুহিত। এ অনুষ্ঠানে অভিযাত্রী দলের হাতে পতাকা হস্তান্তর করেন অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমান ও স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন।
মুহিত জানান, আগামী ১৫ অক্টোবর নেপালের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন তারা। কাঠমান্ডু হয়ে যাবেন লুকলায়। নয় হাজার ৩০০ ফুট উচ্চতায় লুকলা থেকে শুরু হবে পায়ে হাঁটা।
লুকলা থেকে অভিযাত্রী দল চলে যাবে পর্বতকোলের ফাগদিন গ্রামে। সেখান থেকে নামাতি বাজারে গিয়ে সেখানে ২৪ অক্টোবর দিনটি সেখানেই কাটাবেন মুহিতরা।
পরদিন তারা যাবেন এডমন্ড হিলারি ও তেনজিং নোরগের স্মৃতিবিজড়িত খুমজুং গ্রামে। সেখান থেকে চলে যাবেন ১৮ হাজার ২০০ ফুট উচ্চতার কালাপাথর এলাকায়। পরে তারা যাবেন বেইজ ক্যাম্পে।
মুহিত ছাড়া অভিযাত্রী দলের বাকি সদস্যরা সেখান থেকেই ফিরে আসবেন। এরপর তিনটি ক্যাম্প হয়ে আমা দাবলাম চূড়ার দিকে রওনা হবেন এম এ মুহিত।
তিনি বলেন, “আমি অভিযানটি করছি দক্ষিণ দিক থেকে। ৫ হাজার ৭০০ ফুট উচ্চতার বেইজ ক্যাম্প-১, এরপর ২১ হাজার ফুট উচ্চতার বেইজ ক্যাম্প-২ এ যেতে সবচেয়ে কঠিন পাথুরে পথ আমাকে পেরোতে হবে। ভার্টিকাল রক ক্লাইম্ব করাটা খুব সহজ হবে না। তারপর বেইজ ক্যাম্প-২ থেকে বেস ক্যাম্প-৩ এ যেতে আমাকে পেরোতে হবে বরফের খাড়া দেয়াল। পর্বতারোহন দক্ষতার সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা নেবে এই আমা দাবলাম।”
পর্বতারোহীদের সাইট ‘সামিট ক্লাইম্ব’ বলছে, ১০ অক্টোবর থেকে ৭ নভেম্বর আমা দাবলাম অভিযানের উপযুক্ত সময়।
আমা দাবলাম শব্দটির অর্থ মায়ের গলার হার। দূর থেকে দেখলে মনে হতে পারে পর্বততুল্য এক মা তার শিশুকে কোলে নিয়ে রক্ষা করছেন। সেজন্যই এমন নাম
১৯৬১ সালের ১৩ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের বেরি বিশপ, নিউ জিল্যান্ডের মাইক গিল ও ওয়ালি রমানসে, ইংল্যান্ডের মাইক ওয়ার্ড প্রথমবারের মতো এই চূড়া জয় করেন।
হিমালয় অভিযানে পর্বতারোহীদের পছন্দের তালিকায় তিন নম্বরে এই আমা দাবলাম। ২০০৬ সালের নভেম্বরে এই পর্বতের বেইজ ক্যাম্প-৩ এ বরফ ধসে কয়েকজন পর্বতারোহীর মৃত্যু হয়।
মুহিত এর আগে চো-ইয়ো ও মানাসলু শিখরে আরোহন করেছেন। এছাড়া হিমালয়ের ৭ হাজার মিটার এবং ৬ হাজার মিটার উচ্চতার ছয়টি শৃঙ্গে তিনি গেছেন ৭ বার।
এবারের আমা দাবলাম অভিযানে বাংলা মাউন্টেইনিয়ারিং অ্যান্ড ট্রেকিং ক্লাবের অভিযাত্রীদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে ইস্পাহানি টি, ইউনিয়ন ব্যাংক ও চ্যানেল আই।