কোম্পানিটির সঙ্গে ৪১ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি হয়েছিল। কাজ সম্পন্ন না হলেও এখন ২৬ মিলিয়ন ডলার বা ২২০ কোটি টাকা দিতে রফা করে দেশের ‘লাভ’ হয়েছে বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
তারা বলছেন, যে ১৫ মিলিয়ন ডলার কম দিতে হচ্ছে অবার্থুরকে, তা তাদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে আদায় করেছে ইসি, কেননা তারা নির্ধারিত সময়ে কাজটি শেষ করতে পারেনি।
দেশের ১০ কোটি ভোটারকে স্মার্টকার্ড দিতে ‘আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং একসেস টু সার্ভিসেস (আইডিইএ)’ প্রকল্পের আওতায় ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে স্মার্টকার্ড উৎপাদন-বিতরণে অবার্থুর টেকনোলজিসের সঙ্গে চুক্তি করে ইসি।
প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৬ সালের জুনে। পরে মেয়াদ ১৮ মাস বাড়িয়ে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়।
বিশ্ব ব্যাংক ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি-ইউএনডিপির সহায়তায় এই প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা ছিল; ২০১১ সালের তাদের সঙ্গে ইসির চুক্তিও হয়।
কিন্তু দেরির কারণে ফরাসি কোম্পানিটির সঙ্গে ইসি চুক্তি বাতিল করায় এই প্রকল্পে অর্থায়নে অনাগ্রহ দেখায় বিশ্ব ব্যাংক। ফলে দেখা দেয় জটিলতা। ১০ কোটি ১৮ লাখের বেশি ভোটারের মধ্যে দুই কোটি ভোটারের হাতেও স্মার্ট কার্ড দিতে পারেনি ইসি।
চুক্তি বাতিলের কারণে অবার্থুরও বেঁকে বসায় বুধবার নির্বাচন কমিশনে দুই পক্ষের বৈঠকে একটি সমঝোতা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা, এনআইডি উইং মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম এবং বাংলাদেশে ফরাসি রাষ্ট্রদূতসহ সংশ্লিষ্টরা।
প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কোম্পানিটি স্মার্টকার্ডের অনেক কাজ করে দিয়েছে। এজন্য তারা ৪১ মিলিয়ন ডলার পেত।
“কাজ নির্ধারিত সময়ে করতে না পারায় শর্ত ভঙ্গের পর আমরাও ক্ষতিপূরণ নিয়েছি। এখন দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনার পর ২৬ মিলিয়ন ডলার পরিশোধের বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে।”
শর্ত অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে স্মার্টকার্ড সরবরাহ ও পারসোনালাইজেশন করতে ব্যর্থ হওয়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি থেকে ১৫ মিলিয়ন ডলার বা ১৩৯ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় করা হয়েছে বলে জানান তিনি। এই পরিমাণ অর্থই এখন কোম্পানিটিকে কম দিতে হচ্ছে।
“এ সমঝোতায় আমাদের লাভ হয়েছে, দেশের লাভ হয়েছে। কোনোভাবেই আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি না,” বলেন ব্রিগেডিয়ার সাইদুল।
এদিকে অবার্থুরের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের পর বিশ্ব ব্যাংক অনাগ্রহ দেখানোয় নিজস্ব অর্থে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের পথে এগিয়েছে ইসি।
গত বছর ডিসেম্বরে আইডিইএ প্রকল্পের ব্যয় না বাড়িয়ে এক বছর মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাবে জিওবি অর্থায়নে প্রকল্প বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা সাপেক্ষে অনাপত্তি দেয় অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)।
আরও খবর