আপিল বিভাগে নতুন তিন বিচারক

দীর্ঘদিন চার সদস্য নিয়ে বিচার কার্যক্রম চালিয়ে আসার পর নতুন তিনজন বিচারক পেল দেশের সর্বোচ্চ আদালত।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Oct 2018, 11:08 AM
Updated : 8 Oct 2018, 03:43 PM

বাংলাদেশ হাই কোর্টের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসা বিচারপতি জিনাত আরা, বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকী এবং বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান এখন থেকে আপিল বিভাগে বিচারিক দায়িত্ব পালন করবেন।

তাদের তিনজনকে সোমবার আপিল বিভাগে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে হাই কোর্ট বিভাগের বিশেষ কর্মকর্তা সাইফুর রহমান জানান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে আপিল বিভাগের নতুন সদস্যদের শপথ পড়াবেন। শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করবেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. জাকির হোসেন।

নতুন তিনজনকে নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারকের সংখ্যা হল সাতজন।

হাই কোর্টের জ্যেষ্ঠতার ক্রমে চতুর্থ অবস্থানে থাকা বিচারপতি জিনাত আরা হলেন দ্বিতীয় নারী যিনি দেশের সর্বোচ্চ আদালতে বিচারিক দায়িত্ব পেলেন।

তার আগে বাংলাদেশের প্রথম নারী বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের জুলাই পর্যন্ত আপিল বিভাগে দায়িত্ব পালন করেন। 

বিএসসি ও আইন পাস করে ১৯৭৮ সালে মুন্সেফ হিসেবে বিচার বিভাগে দায়িত্ব পালন শুরু করেন জিনাত আরা। ১৯৯৫ সালে পদোন্নতি পেয়ে জেলা ও দায়রা জজ হন।

২০০৩ সালের ২৭ এপ্রিল হাই কোর্টে অস্থায়ী বিচারক হিসাবে নিয়োগ পাওয়ার দুই বছর পর স্থায়ী হন তিনি।

১৯৫৩ সালের ১৫ মার্চ জন্মগ্রহণ করা বিচারপতি জিনাত আরা অবসরের বয়সসীমা অনুযায়ী আরও দুই বছর সর্বোচ্চ আদালতের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।

বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকী এবং বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ২০০৯ সালের ৩০ জুন একইসঙ্গে  হাই কোর্টে অস্থায়ী বিচারক হিসাবে নিয়োগ পান এবং দুই বছরের মাথায় স্থায়ী হন।

সুপ্রিম কোর্টের ওয়েব সাইটে হাই কোর্ট বিভাগের বিচারকদের তালিকায় তারা যথাক্রমে ২৫ ও ২৬তম ক্রমে ছিলেন।

১৯৫৪ সালের ২৯ জুলাই জন্মগ্রহণ করা আবু বকর সিদ্দিকীর ছোট ভাই হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীও সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারক।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনের ডিগ্রি নেওয়ার পর ১৯৭৯ সালে কুষ্টিয়া বারে আইনজীবী হিসাবে তালিকাভুক্ত হন আবু বকর সিদ্দিকী।

পরের বছর মুন্সেফ হিসেবে বিচার বিভাগের চাকরিতে যোগ দেন এবং ১৯৯৭ সালে জেলা ও দায়রা জজ হন। এর এক যুগ পর তিনি ডাক পান হাই কোর্টে।  

বিচারপতি মো. নূরুজ্জামানের জন্ম ১৯৫৬ সালে। একাত্তরে তিনি সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা ও কিশোরগঞ্জ এলাকায় সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।

মাস্টার্স ও এলএলবি ডিগ্রি নেওয়ার পর আইন পেশায় যোগ দেন মো. নূরুজ্জামান। ১৯৮৩ সালে জেলা আদালত এবং ১৯৮৭ সালে হাই কোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসাবে তালিকাভুক্ত হন। ২০০৯ সালে তিনি বিচারক হিসেবে যোগ দেন হাই কোর্টে।

আপিল বিভাগে সর্বশেষ ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনজন বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রায় পৌনে তিন বছর পর আবারও তিনজন বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হল।

দেশের ২১তম প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা পদত্যাগ করার পর গতবছরের শেষ দিকে সেই দায়িত্বভার পান বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা। তখন আপিল বিভাগের সদস্য সংখ্যা ছিল পাঁচজন।  

পরে বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে দেশের ২২তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলে গত ২ ফেব্রুয়ারি পদত্যাগ করেন বিচারপতি ওয়াহহাব মিঞা। ফলে আপিল বিভাগে বিচারকের সংখ্যা নেমে আসে চার জনে।

বিচারপতি ইমান আলী, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দারকে সঙ্গে নিয়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ওই সময় থেকে আপিল বিভাগের বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন।