ডিজিটাল নিরাপত্তা বিলে রাষ্ট্রপতির সই

বিভিন্ন মহলের আপত্তির মধ্যে সংসদে পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা বিলে সই করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Oct 2018, 07:19 AM
Updated : 8 Oct 2018, 08:13 AM

রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, রাষ্ট্রপ্রধান সোমবার বহু আলোচিত ওই বিলে সই করেন।

রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর কোন বিল আইন হিসেবে গণ্য হয়। এখন এটি গেজেট আকারে প্রকাশ করবে সরকার।

সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়ার পর থেকে এর বিভিন্ন ধারা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছিল সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন। তাদের আপত্তির সুরাহা না করেই গত ১৯ সেপ্টেম্বর সংসদে ওই আইন পাস করা হয়।

সংবাদপত্রের সম্পাদকদের একটি সংগঠন সম্পাদক পরিষদ ওই আইনের ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩ ধারা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে বলেছে ওইসব ধারা ‘বাক স্বাধীনতা এবং সাংবাদিকদের স্বাধীনতার পরিপন্থি’।

সরকারের তিন মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকরা ওই আইন সংশোধেনর দাবি জানিয়ে এসেছেন।

সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের পাশাপাশি বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাও ওই আইন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিষয়গুলো সরকারকে সংশোধন করে নিতে বলেছে।

অবশ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব আপত্তিতে কর্ণপাত করেননি। তিনি বলেছেন, কোনো সাংবাদিক ‘মিথ্যা তথ্য’ না দিলে বা ‘বিভ্রান্ত’ না করলে এ আইন নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই।

বরং কোনো সাংবাদিক মিথ্যা তথ্য দিলে সেজন্য ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি যাতে ক্ষতিপূরণ পায়, সে বিষয়টি এ আইনে রাখা উচিৎ ছিল বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

২০০৬ সালের তথ্যও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনা ছিল। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের সময় থেকে সরকার তরফ থেকে বলা হয়েছিল ওই আইনের ৫৭ ধারা বাতিল করে নতুন আইনে বিষয়গুলো স্পষ্ট করা হবে।

বিভিন্ন মহল থেকে সবচেয়ে বেশি আপত্তি এসেছে এ আইনের ৩২ ধারা নিয়ে। সেখানে বলা আছে, যদি কোনো ব্যক্তি ‘অফিশিয়াল সিক্রেট অ্যাক্ট-১৯২৩ এর আওতাভুক্ত কোনো অপরাধ কম্পিউটার, ডিজিটাল ডিভাইস, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, ডিজিটাল নেটওয়ার্ক বা অন্য কোনো ডিজিটাল মাধ্যমে সংঘটন করে বা করতে সহায়তা করেন, তা হলে তিনি সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ড বা ২৫ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

এ আইনের অধীনে সংঘটিত অপরাধের জন্য বিনা পরোয়ানায় তল্লাশি, জব্দ ও গ্রেপ্তারে পুলিশকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

সেখানে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোতে বেআইনি প্রবেশ সর্বোচ্চ ৭ বছরের জেল, ২৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।