পারফরম্যান্স আর্টে নদীতে প্লাস্টিক দূষণ বন্ধের বার্তা

পারফরম্যান্স আর্টের মধ্যে দিয়ে নদীতে প্লাস্টিক দূষণ বন্ধের বার্তা দিলেন নদীকর্মীরা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Sept 2018, 02:31 PM
Updated : 30 Sept 2018, 04:08 PM

শনিবার বিকালে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে রিভারাইন পিপলের সহযোগিতায় কাউন্টার আর্ট নেটওয়ার্কের (ক্যান) শিল্পীরা উপস্থাপন করেন ‘লাইভ অ্যাকশন: নন প্লাস্টিক ভেসেল’।

সদরঘাট টার্মিনালের মেঝেতে টিস্যু কাগজে নদী সচেতনতামূলক একাধিক স্লোগান লিখে উপস্থিত জনতাকে আকৃষ্ট করেন পারফরম্যান্স আর্টের দুই শিল্পী জুয়েল এ রব এবং সাগর জাহিদ।  

পরে লাল ব্যাগে মুখ ঢেকে লাল টেপে নিজেদের জড়িয়ে নিতে থাকেন তারা। এসময় জনতাকেও তাদের পরিবেশনায় সম্পৃক্ত হতে দেখা যায়। নৌকায় চড়ে একটি গাছের চারা বুড়িগঙ্গায় ভাসিয়ে নদীর কিছু অংশ প্রদক্ষিণ করে শেষ হয় এই ‘লাইভ অ্যাকশন’।

আয়োজন নিয়ে রিভারাইন পিপলের পরিচালক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, “নদীর চারটি অ্যাপ্রোচ আছে- ওয়াটার, এনার্জি, বায়োডাইভার্সিটি আর সেডিমেন্ট। … স্পেশালি ওয়াটার পলিউশন নিয়ে আমরা আজকে  এসেছি।

“নদীর দেশে আমরা থাকি, পানির দেশে আমরা থাকি। কিন্তু আমরা আমাদের গ্রাউন্ড ওয়াটার অলরেডি থারটি পারসেন্ট কনজিউম করে ফেলেছি। আমাদের পানির দেশে তো গ্রাউন্ড ওয়াটার ইউজ করার প্রয়োজন কম। আমাদের প্রয়োজন সারফেইস ওয়াটার ব্যবহার করা। এই সচেতনতার খুব বেশি দরকার।”

‘নদী আমার অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িত’ এই উপলব্ধি না জাগলে নদীর উপর ‘অত্যাচার’ চলতে থাকবে বলে মনে করেন হাওর অঞ্চলবাসী সংগঠনের সমন্বয়ক জাকিয়া শিশির।

নদীতে প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে তিনি বলেন, “এই যে প্লাস্টিকের জিনিসগুলো আমরা ফেলছি নদীতে, এগুলো কিন্তু সমুদ্র পর্যন্ত যাচ্ছে। ফলে নদী দূষণের সাথে সাথে আমরা কিন্তু সমুদ্রটাকেও দূষিত করে ফেলছি।”

দূষণের হাত থেকে নদী রক্ষায় প্রশাসনের বড় ভূমিকা লাগবে জানিয়ে এর সঙ্গে আইনের প্রয়োগের উপরও জোর দেন তিনি।    

নদী দূষণ রোধে আইন প্রয়োগের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে ক্লিন রিভার বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়ক সোহাগ মহাজন বলেন, “আপনি যদি একটা মানুষকে হত্যা করেন, তাহলে তার শাস্তি কিন্তু মৃত্যুদণ্ড। ঠিক সেরকম নদীকে যারা হত্যা করছে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি দুয়েকটা নজির স্থাপন না করতে পারবেন যে নদী দখল ও দূষণের ফলে শাস্তি হয়েছে, ততক্ষণ পর্যন্ত যারা দখল-দূষণ করছে তাদের টনক নড়বে না।”  

কাউন্টার আর্ট নেটওয়ার্কের জুয়েল এ রব বলেন,   “আমরা যে পরিমাণ প্লাস্টিক অবজেক্ট ইউজ করি, যে লেভেলে, এবং যেভাবে আমাদের ওয়াটার বডিকে পলিউটেড করছি, এইটা আসলে একটা ভয়ের ব্যাপার।”

তবে জনগণ যদি সচেতন না হয়, সরকারের একার পক্ষে নদী সুরক্ষা সম্ভব নয় বলে মনে করেন জুয়েল।