আদালতের সংবাদ প্রকাশে সাংবাদিকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ

আদালত কার্যক্রমে সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Sept 2018, 05:56 PM
Updated : 26 Sept 2018, 05:56 PM

তিনি বলেছেন, আদালতে কোনো বিচারক কোন কথাটি ‘অন রেকর্ড’ বলেছেন, আর কোন কথাটি ‘অন রেকর্ড’ বলছেন না, সে বিষয়টি সাংবাদিকদের বুঝতে হবে।

বুধবার ‘লিগ্যাল এইড ও আইন সাংবাদিকতা’ শীর্ষক এক কর্মশালায় একথা বলেন প্রধান বিচারপতি।

‘জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা’র সুপ্রিম কোর্ট কমিটি ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’র যৌথ উদ্যোগে আইন বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের সদস্যদের জন্য এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

সুপ্রিম কোর্ট কমিটির চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের সভাপতিত্বে সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. জয়নুল আবেদীন, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল জাকির হোসেন, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি সাঈদ আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক হাসান জাবেদ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, “আমাদের সকলের নিজ নিজ অবস্থান হতে সহযোগিতা এবং দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করার মাধ্যমেই মানুষের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত হতে পারে।”

সাংবাদিকতায় নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় যখন একের পর হাই কোর্ট বেঞ্চ বিব্রত হচ্ছে, তখন এনিয়ে আমি প্রচুর রিপোর্ট করেছি। এগুলোই ছিল তখন হট নিউজ। নিদারাবাদ হত্যাকাণ্ড নিয়ে, মামলার ডেথ রেফারেন্স নিয়েও রিপোর্ট করেছি।”

তার সঙ্গে এই সময়ের সাংবাদিকতার তুলনা করে প্রধান বিচারপতি বলেন, “এখন কিন্তু আদালতে বিচারকরা কী কথা বলেন, এটাও আপনারা লিখে দেন। কিন্তু যেটা আদালতের রেকর্ডে আসে, সেটাই রিপোর্ট করা উচিত।”

এজলাসে বিচারকের এই ধরনের কথা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর দুই-একবার ‘সাংঘাতিক হুলুস্থুল কাণ্ড’ ঘটার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, “বিচারক অন রেকর্ড কিছু লেখেননি। যা বলেছিলেন, শুধুই মৌখিকভাবে বলেছিলেন। এটা নিয়ে আপনারা হুবহু রিপোর্ট করে দিয়েছেন। তারপর তো তা নিয়ে সারাদেশে তুলকালাম কাণ্ড।

“বিচারকরা অনেক সময় কথাচ্ছলে বলে ফেলেন। সুতরাং এনিয়ে কতটা রিপোর্ট করবেন, সেটা ভেবে দেখা উচিত। যেটা অন রেকর্ড সেটা নিয়েই রিপোর্ট করা উচিত। সাংবাদিকদেরও দায়িত্ব রয়েছে। কারণ আদালত একটি স্পর্শকাতর জায়গা।”

আদালতে সাংবাদিকদের আলাদা বসার জায়গা করার আশ্বাস দেন প্রধান বিচারপতি। আদালতে ঢোকার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা থাকলে তাও দূর করার আশ্বাস তিনি দেন।

কর্মশালার দ্বিতীয় পর্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডেইলি অবজারভারের অনলাইন এডিটর কাজী আবদুল হান্নান। এ পর্বে আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের মহাপরিচালক মো. শাহ আলমগীর ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন কমিটির সদস্য সচিব ও সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল টাইটাস হিল্লোল রেমা।