সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে জরিপের ভিত্তিতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৬-১৭ সালে মোংলা কাস্টম হাউজ ১৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকা এবং বন্দর কর্তৃপক্ষ চার কোটি ৬১ লাখ টাকা নিয়ম বহির্ভূতভাবে আদায় করেছে।
এই সময়ে আমদানি করা গাড়ির শুল্কায়নের ক্ষেত্রে কাস্টম হাউজে প্রতি গাড়ি চার হাজার টাকা এবং গাড়ি ছাড়ের ক্ষেত্রে মোংলা বন্দরে এক হাজার ৭১৫ টাকা ‘নিয়ম বহির্ভূতভাবে’ আদায় করা হয়েছে বলে হিসাব দিয়েছে টিআইবি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মোংলা কাস্টম হাউজে জাহাজ আগমন-বহির্গমনের সময় আট হাজার ৩৫০ টাকা করে নেওয়া হয়। আর বন্দর কর্তৃপক্ষ নেয় ২১ হাজার টাকা। এছাড়া পণ্য ছাড়ের ক্ষেত্রে বন্দরে বিকাল ৫টার আগে ৬০০০ এবং পরে ৭২০০ টাকা করে আদায় করা হয়।
বুড়িমারী স্থল বন্দরের শুল্ক স্টেশন ওই সময় আমদানি ও রপ্তানির জন্য বিল অব এন্ট্রিতে দুই কোটি ৮৫ লাখ টাকা নিয়ম বহির্ভূতভাবে আদায় করা হয়েছে এবং স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষ ৪৮ লাখ টাকা নিয়েছে বলে হিসাব দেখিয়েছে টিআইবি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পণ্য আমদানি-রপ্তানির সময় ব্যবহৃত ট্রাক থেকে বুড়িমারীর মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন চাঁদা নিয়েছে পাঁচ কোটি চার লাখ টাকা।
রোববার ধানমণ্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ‘মোংলা বন্দর ও কাস্টম হাউজ এবং বুড়িমারী স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশন: আমদানি-রপ্তানি প্রক্রিয়ায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “দুটি বন্দরেই যোগসাজশ ও বলপূর্বক দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে। সিন্ডিকেটের কারণে সেবাগ্রহীতারা দুর্নীতির শিকার হচ্ছেন। এসব দুর্নীতি নিয়ে কর্তৃপক্ষ অবগত। তারাও সুবিধা পায় বলে এসব বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।”
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমদানি-রপ্তানি পণ্যের কায়িক পরীক্ষা, শুল্কায়ন ও পণ্যছাড়ের দীর্ঘ ও জটিল প্রক্রিয়ার ফলে মোংলা বন্দর ও কাস্টমস হাউজের কর্মীদের একাংশের জন্য নিয়ম বহির্ভূত অর্থ আদায়ের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
“উভয় প্রতিষ্ঠানে অটোমেশন ও ওয়ানস্টপ সার্ভিসের প্রচলন হলেও তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অকার্যকর রাখা হয়েছে। পেপারলেস অফিস প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়নি।”
টিআইবি বলছে, এ দুই প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি বন্ধ করতে হলে পণ্যের শুল্কায়ন, কায়িক পরীক্ষা, পণ্য-ছাড় এবং জাহাজের আগমন-বহির্গমন প্রক্রিয়া অনুমোদনে কার্যকর ওয়ান স্টপ সার্ভিস নিশ্চিত করতে হবে।